ভারতের মণিপুর রাজ্যে দুই ছাত্রছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় বুধবার দ্বিতীয় দিনের মতো ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। রাজধানী ইম্ফলে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে মঙ্গলবারের মতোই।
সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে আবারও ইম্ফলে কারফিউ জারি করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন আরও ছয়মাসের জন্য জারি করার কথা ঘোষণা করেছে সরকার।
গেল জুলাই মাসে ইম্ফলের দুই ছাত্রছাত্রী নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল। তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই সম্প্রদায়ের। প্রায় চার মাস বন্ধ থাকার পরে গত শনিবার রাজ্যে ইন্টারনেট পরিষেবা চালুর পরে সোমবার ওই দুই ছাত্রছাত্রীর নৃশংস মৃত্যুর ছবি ভাইরাল হয়।
ভাইরাল হওয়া একটি ছবিতে দেখা যায়, ওই দুই ছাত্রছাত্রী জড়সড় হয়ে ঘাসের ওপরে বসে আছে আর পেছনে বন্দুকধারী দুই ব্যক্তিকে দেখা যায়। এর পরের ছবিটিতে ওই দুই ছাত্রছাত্রীর মৃতদেহ দেখা যায়।
মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং ঘোষণা করেছেন, কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো বা সিবিআই ইতোমধ্যে ঘটনার তদন্ত হাতে নিয়েছে। বুধবার দিল্লি থেকে সিবিআইয়ের একটি দল ইম্ফল পৌঁছেছে।
ইম্ফলের স্থানীয় সাংবাদিকরা জানান, মঙ্গলবার দিনে বিক্ষোভ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনা গেলেও রাতে আবারও বিক্ষোভ শুরু হয়। ছাত্রছাত্রীরা মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির দিকে এগোনোর চেষ্টা করছিলেন।
বুধবার সকালে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কাছেই কাংলা দুর্গের সামনে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভের প্রথম দিনেও লাঠিচার্জ আর কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে পুলিশ। দ্বিতীয় দিনেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে লাঠিচার্জ আর কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়েছে পুলিশ।
গত দুদিনের বিক্ষোভে স্কুলের পোশাক পরেই ছাত্রছাত্রীরা রাস্তায় নেমেছিল, সঙ্গে ছিল কলেজ ছাত্রছাত্রীরাও।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম বলছে মঙ্গলবারের বিক্ষোভে অন্তত ৫০ জন ছাত্রছাত্রী আহত হয়েছে, যাদের মধ্যে কয়েকজনের আঘাত গুরুতর।
বুধবারের বিক্ষোভের পরেই ইম্ফলে ফের কারফিউ জারি করে দেওয়া হয়েছে। এই বিক্ষোভের জেরে মঙ্গলবার থেকেই আবারও ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বুধবার বিকেলে মণিপুরের স্বরাষ্ট্র দপ্তর এক ঘোষণায় জানিয়েছে, সেনাবাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন মণিপুরের ১৯টি থানা এলাকা বাদে বাকি সব জায়গায় আরও ছয় মাসের জন্য চালু থাকবে।
এই আইন জারি করা হচ্ছে মূলত পার্বত্য এলাকায়, যেখানে সংখ্যালঘু কুকি সম্প্রদায়ের বসবাস।
বিবিসি বাংলা অবলম্বনে
বাংলাদেশ সময়: ২১৫২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৩
আরএইচ