সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহতায়ালা অসীম দাতা ও দয়ালু। সৃষ্টিজীব হিসেবে আমরা তার কাছ থেকে প্রতিদিন অসংখ্য নেয়ামত পেয়ে থাকি।
এসব নেয়ামতের অন্যতম হলো দোয়া কবুল হওয়া। মানুষ হিসেবে আমরা যেকোনো সমস্যায় পড়লেই আমরা আল্লাহতায়ালাকে ডাকি। আর আল্লাহতায়ালও তার প্রিয় সৃষ্টি মানুষের দোয়া কবুল করার জন্য বিভিন্ন রকম সুযোগ খোঁজেন। সেজন্য দিন-রাতের কিছু মুহূর্ত ঠিক করে রেখেছেন যখন দোয়া কবুল হয়।
আজান ও ইকামতের সময়
হজরত আনাস রাজিয়াল্লাহ আনহু থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ের দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। ’ –সুনানে তিরমিজি: ১৯৬
রাতের শেষ তৃতীয়াংশে
প্রতিটি রাতের শেষ তৃতীয়াংশে দোয়া কবুল হয়। সাহাবি হজরত আবু হোরায়রা রাজিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, হাদিসে ইরশাদ হচ্ছে, ‘প্রত্যেক দিন-রাতের শেষ তৃতীয়াংশে আল্লাহ সবচেয়ে নিচের আসমানে নেমে আসেন এবং বলেন, কে আমাকে ডাকছো, আমি তোমার ডাকে সাড়া দেবো। কে আমার কাছে চাইছো, আমি তাকে তা দেবো। কে আছো আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনাকারী, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেবো। ’ –সহিহ মুসলিম: ১২৬৩
শেষ রাতে
সাহাবি হজরত জাবের রাজিয়াল্লাহ আনহু থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘শেষ রাতের যেকোনো সময় কোনো মুসলিমের এমনটা হয় না যে, সে পৃথিবী বা পরকালের জন্য আল্লাহর কাছে কিছু চাইল আর তাকে তা দেওয়া হলো না। আর এটা প্রতিটি রাতেই ঘটে। ’ –সহিহ মুসলিম: ১২৫৯
জমজমের পানি পান
হজরত রাসূলুল্লাহ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘জমজমের পানি যে নিয়তে পান করা হবে তা কবুল হবে। ’ -ইবনে মাজা: ৩০৫৩
রাতে ঘুম থেকে জেগে
সাহাবি হজরত উবাদা বিন সামিত রাজিয়াল্লাহ আনহু হতে বর্ণিত, হজরত নবী করিম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে কেউ রাতের বেলা ঘুম থেকে জাগে আর বলে; ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারিকালাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির। আলহামদুলিল্লাহি ওয়া সুবহানাল্লাহি ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুয়াতা ইল্লা বিল্লাহ্’ এবং এরপর বলে, ‘আল্লাহুম মাগফিরলি (আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করুন) অথবা আল্লাহর কাছে কোনো দোয়া করে, তাহলে কবুল করা হবে। ’ –সহিহ বোখারি: ১০৮৬
সেজদার সময়
প্রিয় নবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে সময়টাতে বান্দা আল্লাহর সবচেয়ে নিকটবর্তী অবস্থায় থাকে তা হলো সেজদার সময়। তোমরা সে সময় আল্লাহর কাছে বেশি চাও। ’ –সহিহ মুসলিম: ৭৪৪
ফরজ নামাজের পর
সাহাবি হজরত আবু উমামা রাজিয়াল্লাহ আনহু থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘ইয়া রাসূলুল্লাহ! কোন সময়ের দোয়া দ্রুত কবুল হয়? তিনি বলেন, রাতের শেষ সময়ে এবং ফরজ নামাজের পরে। ’ –সুনানে তিরমিজি: ৩৪২১
বৃষ্টি ও আজানের সময়
হজরত রাসূলুল্লাহ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘দুই সময়ের দোয়া ফেরানো হয় না। আজানের সময়ের দোয়া ও বৃষ্টি পড়ার সময়কার দোয়া। ’ সুনানে আবু দাউদ: ২১৭৮
আসলে আল্লাহতায়ালা আমাদের দোয়া কবুলের যে সুযোগগুলো দিয়েছেন; সেটা আমাদের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। আমাদের উচিত সেটা কাজে লাগানো। আল্লাহতায়ালা আমাদের তওফিক দান করুন। আমিন।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০২৩
এসআরএস