জীবনকে সুন্দর করার সঠিক উপায় হচ্ছে সর্বদা ইতিবাচক চিন্তাভাবনা করা। নিজের ওপর পূর্ণ আস্থা রাখা।
রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘সম্পদের আধিক্যতায় ধনী হয় না, অন্তরের ধনীই প্রকৃত ধনী। ’ (বুখারি)।
মুসলমান হিসেবে আমরা জানি, এ পার্থিব জীবন একটি পরীক্ষা মাত্র। আমরা বিশ্বাস করি, জীবনে চলার পথে কখনো বাধার সম্মুখীন হতে হয়, বিপদে পড়তে হয়, চিন্তাগ্রস্ত হতে হয়, ভাবতে হয়। আবার আনন্দময় মুহূর্তও পাওয়া যায়। সবই আল্লাহর পক্ষ থেকে। তিনিই সবকিছুর নিয়ন্তা। অতএব তাঁর ওপর ভরসা করে জীবনের সব মুহূর্ত সুদৃঢ় মনোবল নিয়ে পাড়ি দিতে হবে। এগিয়ে যেতে হবে আপন লক্ষ্যে। ছিনিয়ে আনতে হবে মুক্তির সূর্য। চিরকাঙ্ক্ষিত বিজয়।
মহান প্রভু ঘোষণা করেন, ‘এরপর যখন কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ফেলেন, তখন আল্লাহর ওপরই ভরসা করুন। আল্লাহ ভরসাকারীদের ভালোবাসেন। ’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত ১৫৯)।
ইসলাম বলে, একমাত্র আল্লাহই আমাদের সব দুশ্চিন্তা, হতাশা, অক্ষমতা ও কঠিন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ করতে পারেন। তাই সর্বাবস্থায় তাঁর সাহায্য কামনা করা বুদ্ধিমানের কাজ।
মহানবী (সা.) যাবতীয় দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তিলাভ এবং মনোবল অর্জনের জন্য মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতেন, ‘হে আল্লাহ! আপনার কাছে আমি দুশ্চিন্তা, দুঃখ, অপারগতা, অলসতা, কৃপণতা, ভীরুতা, ঋণের ভার এবং মানুষের প্রভাব বিস্তার থেকে আশ্রয় চাই। ’ (বুখারি)।
অন্য এক হাদিসে বর্ণিত আছে, রসুলুল্লাহ (সা.) নামাজে প্রার্থনা করতেন, ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে কাজের ওপর স্থায়িত্ব এবং দৃঢ় থাকার প্রার্থনা করছি। ’ (তিরমিজি)।
প্রতিটি মানুষের মাঝে আবেগ আর অনুভূতি আছে। এগুলো না থাকলে আমরা মানুষ হয়ে উঠতে পারতাম না। তবে আমাদের স্মরণ রাখতে হবে জীবন একটি ‘ওয়ান টাইম অফার’। এ অফারটি আমাদের বিবেচনার সঙ্গে ব্যবহার করা প্রয়োজন।
অলস বা ভীরু হয়ে সময় ক্ষেপণ করা জীবনের প্রতি অবিচার। হীনমন্যতা এবং হতাশার কারণে মন ও কাজের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়। শরীর ও মেধা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার উপক্রম হয়। মানুষের মনোবল এবং দৃঢ় আস্থা কাজের ওপর ভালো প্রতিক্রিয়া বয়ে আনে। আল্লাহ কর্তৃক প্রদানকৃত অনন্য উপহারগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো, নিজের ইচ্ছায় চলার ক্ষমতা। তাই জীবনের যে-কোনো ব্যাপারে যদি আমরা চিন্তা করি- আমরা সফল হব, এ চিন্তাটাই আমাদের অনেক দূর এগিয়ে নেবে। নিজের প্রতি বিশ্বাসী ও আশাবাদী মানুষের প্রতিটি মুহূর্ত সুন্দর হবে।
একজন পজিটিভ চিন্তাশীল সর্বদাই আনন্দ উপভোগ করবে। তার মানসিকতার মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারবে শান্তির পথে, সমৃদ্ধির পথে। মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন, ‘সহজ কর, কঠিন কোরো না, শান্তি প্রদান কর, বিদ্বেষ সৃষ্টি কোরো না। ’ (বুখারি)