কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, তোমার রবের ইবাদত করতে থাকো ইয়াকিন বা সুনিশ্চিত সময় আসা পর্যন্ত। (সুরা হিজর: ৯৯) নির্ভরযোগ্য সব মুফাসসিরের মতে এখানে ইয়াকিন বা সুনিশ্চিত সময় বলে মৃত্যু বোঝানো হয়েছে।
এ ব্যাখ্যা সাহাবি ও তাবেঈদের প্রখ্যাত মুফাসসিরদের থেকে বর্ণিত হয়েছে। আবদুললাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, এ আয়াতে ‘ইয়াকিন’ শব্দের উদ্দেশ্য মৃত্যু। মৃত্যুকে ইয়াকিন শব্দ বলার কারণ হলো মৃত্যু একটি সুনিশ্চিত বিষয়। (তাফসীরে কাবির: ১৯/২২১)
সালেম ইবনে আবদুল্লাহ (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, এ আয়াতে ইয়াকিন শব্দের অর্থ মৃত্যু। (সহিহ বুখারি: ২/৬৮৩) এ ছাড়াও মুজাহিদ (রাহ.) কাতাদা (রহ.) হাসানসহ (রাহ) প্রখ্যাত তাবেঈদের সূত্রে এ তাফসির বর্ণিত রয়েছে।
এক শ্রেণির বিভ্রান্ত মানুষ এ আয়াত থেকে এ রকম ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করে যে, এখানে ইয়াকিন বলে মারেফত উদ্দেশ্য। তাই কেউ যখন মারেফত লাভ করে, তখন তার ওপর আর ইবাদত অপরিহার্য থাকে না। তিনি তখন ফরজ বিধান পালন না করলেও সমস্যা নেই।
এটা একেবারেই ভ্রষ্ট ও মূর্খতাপূর্ণ একটি ধারণা। ইসলাম সম্পর্কে একেবারে অজ্ঞ মানুষজনই শুধু এ রকম ভ্রান্ত ধারণা পোষণ করতে পারে। পূর্ববর্তী নবি-রাসুলগণ, শেষ নবি হজরত মুহাম্মাদসহ (সা.) আল্লাহর সব প্রিয় বান্দারা আমৃত্যু আল্লাহর ইবাদত করে গেছেন। জীবনের কোনো পর্যায়ে তারা ইবাদত ছেড়ে দেননি। বরং জীবনের শেষ পর্যায়ে কাজকর্ম কমে আসলে আল্লাহর ইবাদত বাড়িয়ে দেওয়া উচিত।
আল্লাহর শেষ নবি ও রাসুল হজরত মুহাম্মাদ (সা.) ছিলেন সব নবি-রাসুলদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। ছিলেন সব কালের সব মানুষের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ মুত্তাকি, পরহেজগার ও মারেফতপ্রাপ্ত মানুষ। তিনি মুমূর্ষু অবস্থায়ও আল্লাহর ইবাদত করে আমাদের জন্য দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। আমাদের কর্তব্য জীবনের সব ক্ষেত্রে তার অনুসরণ করা এবং উল্লিখিত ভ্রান্ত ব্যাখ্যা ও বিশ্বাস থেকে বেঁচে থাকা।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২৩
জেএইচ