সফল মুমিনের অন্যতম গুণ হলো তারা একাগ্রচিত্তে নামাজ আদায় করে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘অবশ্যই মুমিনরা সফল হয়েছে, যারা নিজেদের নামাজে খুশুখুজু অবলম্বন করে।
খুশুখুজু মানে হলো, অন্তরের একাগ্রতা, নামাজ অবস্থায় ইচ্ছাকৃত খেয়াল, কল্পনাবিহার ও যাবতীয় চিন্তা (সুচিন্তা, কুচিন্তা ও দুশ্চিন্তা) হতে হৃদয়কে মুক্ত রাখা এবং আল্লাহর মহত্ব ও মহিমা তাতে চিত্রিত করার চেষ্টা করা। আর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের একাগ্রতা হলো এদিক-ওদিক না তাকানো, মুদ্রাদোষজনিত কোনো ফালতু নড়াচড়া না করা, চুল-কাপড় ঠিকঠাক না করা; বরং এমন ভয়-ভীতি, কাকুতি-মিনতি ও বিনয়ের এমন ভাব প্রকাশ পাওয়া উচিত, যেমন কোনো রাজা-বাদশাহ বা মহান কোনো ব্যক্তিত্বের কাছে গিয়ে প্রকাশ হয়ে থাকে।
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ খুজুখুজুর সহিত নামাজ পড়াসহ আরও কিছু আমলের কথা বলেছেন, যেগুলোর পুরস্কার জান্নাত। এই সুরার ১০ ও ১১ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তারাই হবে উত্তরাধিকারী। তারা ফিরদাউসের উত্তরাধিকার লাভ করবে, যাতে তারা চিরস্থায়ী হবে। ’ (সুরা মুমিনুন, আয়াত : ১০-১১)
প্রশ্ন হলো, নামাজে পূর্ণ খুশুখুজু কিভাবে আনব, এর একটি উপায় হলো, প্রতিটি নামাজকে জীবনের শেষ নামাজ মনে করা।
এতে নামাজে একাগ্রতা বাড়বে। নামাজ মানুষকে পাপমুক্ত করে এবং মানুষের ভেতর ঈমানের নুর বা জ্যোতি সৃষ্টি করে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীলতা ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে। ’ (সুরা আনকাবুত, আয়াত : ৪৫)।
এই জ্যোতি পেতে অবশ্যই নামাজটা পূর্ণ একাগ্রতা দিয়ে আদায় করতে হবে। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আদায় করতে হবে।
আল্লামা ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন, ‘আপনার কি ধারণা যে ব্যক্তি বিশ্বাস করে সে এ নামাজের পর আর কখনো নামাজের সুযোগ পাবে না, তখন সে কিভাবে নামাজ আদায় করবে? সে চেষ্টা করবে যেন তাঁর নামাজ কবুল হয় এবং সে সর্বোচ্চ মনোযোগ ও যত্ন নিয়ে নামাজ আদায় করবে। নামাজের ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নতগুলো পরিপূর্ণভাবে আদায় করবে। ’ (শরহু জাওয়ামিউল আখবার : ৩/১৪৫)
অতএব নামাজে মনস্থির রাখতে অসুবিধা হলে আমাদের উচিত সেই নামাজকে জীবনের শেষ নামাজ ভেবে সর্বোচ্চ একাগ্রচিত্তে পড়ার আপ্রাণ চেষ্টা করা। মহান আল্লাহর সাহায্য চাওয়া।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২৪
এএটি