ভুল স্বীকার করা মানুষের দুর্বলতা নয়, বরং তা নৈতিক শক্তিরই প্রমাণ। ইসলামের দৃষ্টিতে ভুলের ওপর অটল থাকাই নিন্দনীয়।
মানুষের ভুল হওয়াই স্বাভাবিক। হাদিসের ভাষ্যমতে, মানুষ ভুল করার পর অনুতপ্ত হবে এটাই আল্লাহর পছন্দ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যদি তোমরা পাপ না করতে তবে আল্লাহ এমন মাখলুক বানাতেন যারা পাপ করত এবং আল্লাহ তাদের মাফ করে দিতেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৬৮৫৬)
যে ব্যক্তি ভুল স্বীকার করে এবং ক্ষমা প্রার্থনা করে, ক্ষমাকারী ব্যক্তির চেয়ে অগ্রগামী।
আবু দারদা (রা.) বলেন, একবার আবু বকর (রা.) ও ওমর (রা.)-এর মধ্যে বিতর্ক হলো, আবু বকর (রা.) ওমর (রা.)-কে রাগিয়ে দিয়েছিলেন। ওমর (রা.) রাগান্বিত অবস্থায় সেখান থেকে চলে গেলেন। আবু বকর (রা.) তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে করতে তাঁর পিছু নিলেন। কিন্তু ওমর (রা.) ক্ষমা করলেন না, বরং তাঁর সম্মুখের দরজা বন্ধ করে দিলেন।
এরপর আবু বকর (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এলেন। আবু দারদা (রা.) বলেন, আমরা তখন রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে ছিলাম, ঘটনা শোনার পর রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, তোমাদের এই সঙ্গী আবু বকর আগে কল্যাণ লাভ করেছে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৪৬৪০)
যারা ভুল স্বীকার করে আল্লাহ তাদের ক্ষমা করেন। যদিও তারা পুরোপুরি পাপমুক্ত হতে পারে না। মহান আল্লাহ বলেন, ‘এবং অপর কতক লোক নিজের অপরাধ স্বীকার করেছে, তারা এক ভালো কাজের সঙ্গে অপর মন্দ কাজ মিশ্রিত করেছে।
আল্লাহ হয়তো তাদের ক্ষমা করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ’ (সুরা : তাওবা, আয়াত : ১০২)
কোনো ভুল হয়ে গেলে তা স্বীকার করে নেওয়াই নবী-রাসুলদের বৈশিষ্ট্য। মুসা (আ.) অনুতপ্ত হয়ে বলেছিলেন, ‘মুসা বলল, এটা শয়তানের কাণ্ড। সে তো প্রকাশ্য শত্রু ও বিভ্রান্তকারী। সে বলল, হে আমার প্রতিপালক! আমি তো নিজের প্রতি অবিচার করেছি। সুতরাং আমাকে ক্ষমা করুন। অতঃপর তিনি তাকে ক্ষমা করলেন। তিনি তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ’ (সুরা : কাসাস, আয়াত : ১৫-১৬)
যখন কোনো ব্যক্তি নিজের ভুলের জন্য অনুতপ্ত হয়, তখন তাকে ক্ষমা করাই ইসলামের নির্দেশ। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যারা সচ্ছল ও অসচ্ছল অবস্থায় ব্যয় করে এবং যারা ক্রোধ সংবরণকারী এবং মানুষের প্রতি ক্ষমাশীল। আল্লাহ সত্কর্ম পরায়ণদের ভালোবাসেন। ’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৩৪)
বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২৪
জেএইচ