ইসলামের প্রথম নার্স ছিলেন নারী সাহাবি রুফাইদা (রা.)। তিনি বানু খাজরাযের আসলাম গোত্রের সদস্য ছিলেন।
যারা রাসূল (সা.)-কে মদিনায় তার আগমনের দিন অভ্যর্থনা জানান, তিনি ছিলেন তাদের অন্যতম। রুফাইদা (রা.)-এর পিতা সাদ আল-আসলামি মদিনার মানুষদের চিকিৎসা করতেন।
রুফাইদা (রা.) বাবার কাছ থেকে রোগ-নিরাময়ের শিক্ষা নেন।
কোমল হৃদয়ের কারণে তিনি অসুস্থ, অসহায় ও শিশুদের কল্যাণে নিজের অধিকাংশ সময় ব্যয় করেন। ইমাম বুখারি (র.) ‘আদাবুল মুফরাদ’ কিতাবে লিখেছেন, মসজিদে নববির পাশে তার একটি তাঁবু ছিল। যেখানে তিনি অসুস্থদের সেবাদান করতেন। খন্দকের যুদ্ধে সাদ ইবনে মুয়াজ (রা.) আহত হলে রাসুল (সা.) তাকে সেই তাবুতে রেখে চিকিৎসার আদেশ দেন।
মদিনার আনসার-মুহাজিরদের অন্যান্য নারী সাহাবিদের তিনি নার্সিং প্রশিক্ষণ দেন। তার শিষ্য নারী সাহাবিরা বদর, উহুদ, খন্দক ও খায়বারসহ অন্যান্য জিহাদ-সংগ্রামগুলোতে অংশগ্রহণ করে আহতদের চিকিৎসাসেবা দান করতেন।
রাসূল (সা.) খায়বারের যুদ্ধে যাবার জন্য যখন প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখন রুফাইদা (রা.) ও একদল স্বেচ্ছাসেবী নার্স (নারী সাহাবি) তার কাছে এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা আপনার সঙ্গে যুদ্ধে যেতে চাই। আহতদের সেবা করার পাশাপাশি মুসলিমদের যতটুকু সম্ভব সাহায্যের চেষ্টা করবো। রাসূলুল্লাহ (সা.) অনুমতি দিলেন। কেউ আহত হলে তিনি তাকে রুফাইদার তাবুতে পাঠিয়ে দিতেন। তিনি ও তার স্বেচ্ছাসেবী ‘নার্স বাহিনী’ খুবই চমৎকারভাবে এ কাজ সম্পন্ন করেন। ফলে খুশি হয়ে রাসূল (সা.) খায়বার-যুদ্ধের গনিমতের একটা অংশ রুফাইদা (রা.)-এর জন্য বরাদ্দ করেন। তাকে যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুসলিমদের সমান মর্যাদা (গনিমত) দেওয়া হয়েছিল।
ইউরোপীয় চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা ঊনবিংশ শতাব্দীর ‘ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল’-কে নার্সিংয়ের পথিকৃৎ বলেন। কিন্তু অনেক মুসলিম ঐতিহাসিক বলেন, ‘নার্স’ কথাটি ইতিহাসে প্রথম রুফাইদা (রা.) এর ক্ষেত্রেই প্রয়োগ করা যায়। বাহরাইনের ‘রয়েল কলেজ অফ সার্জন্স ইন আয়ারল্যান্ড’ তার সম্মানে প্রতিবছর ‘Rufaida Al-Aslamia Prize in Nursing’ পদক প্রদান করে থাকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২৪
এসআইএস