মসজিদে বিয়ে পড়ানোর প্রচলন রয়েছে মুসলিম সমাজে। বিয়ের মতো জীবনের অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টির সাক্ষ্য মসজিদে হোক, চান অনেকেই।
সম্প্রতি পবিত্র কাবা ও মসজিদে নববীতে বিয়ে পড়ানোর অনুমতি দিয়েছে সৌদি আরব। যদিও এ ক্ষেত্রে ইসলামের সবচেয়ে পবিত্র স্থান দুটির পবিত্রতা ও সম্মান রক্ষায় বেশ কিছু শর্ত জুড়ে দিয়েছে সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়।
এ খবরে মসজিদে বিয়ে পড়ানোর রীতিটি আলোচনায় উঠে এসেছে। প্রশ্ন এসেছে - মসজিদে বিয়ে করা কি সুন্নাত?
এ ক্ষেত্রে ফুকাহায়ে কেরামের অধিকাংশের মতে, বিয়ের আকদের অনুষ্ঠান মসজিদে করা মুস্তাহাব।
যেহেতু বিয়ে ইবাদত ও মসজিদ বরকতময় স্থান, মসজিদে জনসাধারণের উপস্থিতি থাকে। তাই খুব সহজেই বিয়ের ব্যাপারটি সবাই জানতে পারে- যেটা শরিয়তের দৃষ্টিতে পছন্দনীয়। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে রাসুল (সা.) বলেছেন,
أعلنوا هذا النكاح واجعلوه في المساجد واضربوا عليه بالدفوف
বিয়ের কথা ঘোষণা করো, বিয়ে মসজিদে করো এবং বিয়েতে দফ বাজাও। (সুনানে তিরমিজি: ১০৮৯)
তবে ইমাম তিরিমিজি (রহ.) ও ইবনে হাজার (রহ.) হাদিসটিকে যঈফ বা দুর্বল বলেছেন।
নবিজির (সা.) যুগে সাহাবিদের সব বিয়ের আকদ মসজিদে হতো না। নবিজিরও (সা.) সব বিয়ের আকদ মসজিদে হয়নি। নবিজি (সা.) খুব জোর দিয়ে সবার বিয়ের আকদ মসজিদে করার নির্দেশ দিয়েছেন এ রকমও কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না।
তাই এটা অপরিহার্য বা খুব গুরুত্বপূর্ণ নয় যে প্রতিটি বিয়ের আকদ মসজিদেই হতে হবে। দুই পক্ষের সুবিধা অনুযায়ী যে কোনো জায়গায় বিয়ের আকদ হতে পারে। সফর অবস্থায়ও বিয়ে করা যায়। রাসুল (সা.) সাফিয়াকে (রা.) বিয়ে করেছিলেন খায়বার যুদ্ধ থেকে ফেরার পথে। (সহিহ বুখারি: ৪২১১)
মসজিদে বিয়ে হওয়ার কারণে যদি বিয়ের ইসলামের নির্দেশনাবিরোধী আচার অনুষ্ঠান কমানো সম্ভব হয়, তাহলে বিয়ে মসজিদেই করা উচিত। বরকতময় স্থান, জনসাধারণের উপস্থিতি ও দোয়ার সুযোগ ইত্যাদি কারণে মসজিদে বিয়ে হওয়া অবশ্যই পছন্দনীয় ও মুস্তাহাব। কিন্তু মসজিদে বিয়ে হওয়াকে অপরিহার্য বা মুআক্কাদা সুন্নাত মনে করা, মসজিদের বাইরে বিয়ে হওয়াকে নিন্দনীয় মনে করা সমীচীন নয়।
আলেমদের মতে, মসজিদে বিয়ে সম্পন্ন করার বিষয়টি ইতিবাচক। তবে এক্ষেত্রে মসজিদের পবিত্রতা রক্ষার প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০২৪
এসএএইচ