ঢাকা, শুক্রবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

কুমন্ত্রণা থেকে বাঁচতে করণীয়

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪০ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২৪
কুমন্ত্রণা থেকে বাঁচতে করণীয়

শয়তানের কুমন্ত্রণা ভয়ংকর একটি বিষয়। শয়তানের কুমন্ত্রণায় মানুষের ঈমান দুর্বল হয়ে যায়।

শুধু তাই নয় অনেক সময় মুমিনের জীবনকে বিপন্ন করে তুলে শয়তানের কুমন্ত্রণা।

সৃষ্টির শুরু থেকেই শয়তান মানুষকে নানাভাবে কুমন্ত্রণা দিয়ে আসছে। দুনিয়াতে একজন মুমিন অবশিষ্ট থাকা অবস্থায় শয়তানের এ কাজ অবশিষ্ট থাকবে।

সাহাবিরাও এমন সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলেন। এ প্রসঙ্গে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, সাহাবিদের একটি দল হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলো, আমরা আমাদের অন্তরে কখনো কখনো এমন বিষয় অনুভব করি, যা মুখ দিয়ে উচ্চারণ করা আমাদের কাছে খুব কঠিন মনে হয়। হজরত রাসূল (সা.) বললেন, সত্যিই কি তোমরা এ রকম পেয়ে থাক তারা বললেন, হ্যাঁ; আমরা এ রকম অনুভব করি। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, এটি তোমাদের ঈমানের স্পষ্ট প্রমাণ।

শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.) তার কিতাবুল ঈমানে বলেছেন, মুমিন ব্যক্তি শয়তানের প্ররোচনায় কখনো কুফরির মতো কুমন্ত্রণায় পতিত হয়। এতে তাদের অন্তর সংকুচিত হয়ে যায়।  

মুমিন ব্যক্তির এমন কুমন্ত্রণাকে অপছন্দ করা সত্ত্বেও তার মনে এর উদয় হওয়া এবং তা প্রতিহত করতে প্রাণপন চেষ্টা করা তার ঈমানদার হওয়ার প্রমাণ বহন করে।  

বস্তুত কোনো মানুষ যখন বুঝবে শয়তানের কুমন্ত্রণা প্রসঙ্গে, তখন তার উচিত কুমন্ত্রণার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া। সেই সঙ্গে মনে রাখা, এমন কুমন্ত্রণায় কোনো গোনাহ হয় না।  

এ প্রসঙ্গে নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘(শয়তানের কুমন্ত্রণা)আমলে পরিণত করা অথবা মুখে উচ্চারণ না করা পর্যন্ত আল্লাহতায়ালা আমার উম্মতের মনের কুমন্ত্রণা বা ওয়াসওয়াসাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। ’

যদি প্রশ্ন করা হয়, শয়তান কুমন্ত্রণা কি আপনি বিশ্বাস করেন সেটাকে আপনি সত্য মনে করেন উত্তরে আপনি অবশ্যই বলবেন, এসব কুমন্ত্রণাকে আপনি মনেপ্রাণে ঘৃণা করেন। এগুলো শয়তানের ফাঁদ। মানুষকে পাপে লিপ্ত করার জন্যই সে এমন ফাঁদ পেতেছে। মানুষকে গোমরাহ করার জন্য শয়তান তাদের শিরা-উপশিরায় চলাচল করে থাকে।

সামান্য কোনো বিষয় কিংবা জিনিসের ক্ষেত্রে কিন্তু শয়তান মানুষের মনে কুমন্ত্রণা দেয় না। দুনিয়ার বিষয়েও শয়তান থাকে নির্লিপ্ত। কারণ, এতে শয়তানের কোনো লাভ নেই। কিন্তু মানুষের ঈমানকে বরবাদ করে দেওয়ার মাঝে শয়তানের বিরাট স্বার্থ রয়েছে।  

নবী করিম (সা.) শয়তানের ওয়াস্ওয়াসা থেকে বাঁচার পন্থাও আমাদের জন্য বর্ণনা করেছেন। প্রথমত এসব ধারণা থেকে বিরত থাকা এবং শয়তানের ধোঁকা থেকে বাঁচতে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা।  

যখন কোনো মুমিন শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনায় ইবাদতে মশগুল হয়- তখন তার অন্তর থেকে কুমন্ত্রণা চলে যায়। সুতরাং মানুষের অন্তরে শয়তানের কুমন্ত্রণা জাতীয় যা কিছু উদয় হলে, তা থেকে নির্লিপ্ত থাকতে হবে। সর্বাবস্থায় মনে রাখতে হবে, এসবের কোনো অস্তিত্ব নেই; বরং তা ভিত্তিহীন মনের কল্পনা মাত্র।  

ওয়াস্ওয়াসার রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য বেশি উপকারী হলো, বেশি বেশি করে আল্লাহতায়ালার জিকির করা। আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে অধিকহারে ইবাদতে মশগুল হওয়া।  

যখন মানুষ পরিপূর্ণরূপে ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল হবে- ইনশাআল্লাহ এ ধরনের কুচিন্তা দূর হয়ে যাবে। এ ছাড়া এই রোগ থেকে রক্ষা পেতে আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করা।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪০ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২৪
এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।