পুণ্যের মাস পবিত্র মাহে রমজানের প্রথম ২০ দিন পার হয়ে যাচ্ছে আজ। মুসলমানদের জীবনে রমজান আসে পরিবর্তনের বার্তা নিয়ে, জীবনকে নতুনভাবে ঢেলে সাজানোর তাগিদ নিয়ে।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘রমজান মাসই হলো সেই মাস, যাতে নাজিল করা হয়েছে কোরআন, যা মানুষের জন্য হিদায়াত ও সত্যপথযাত্রীদের জন্য সুস্পষ্ট পথনির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মধ্যে পার্থক্য বিধানকারী। ’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৮৫)
মাহে রমজানের রোজা মানুষের আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজজীবনে অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে চলার শিক্ষা দেয়। হিংসা-বিদ্বেষ, হানাহানি ও আত্ম-অহংবোধ ভুলে গিয়ে সুখী, সুন্দর ও সমৃদ্ধিশালী সমাজ প্রতিষ্ঠার মাসই হলো মাহে রমজান। রোজা মানুষকে পার্থিব লোভ-লালসা, হিংসা-বিদ্বেষ, পরচর্চা, পরনিন্দা, মিথ্যাচার, প্রতারণা, আত্মসংযমের শিক্ষা দেয়।
রোজা মানুষকে আত্মনিয়ন্ত্রণ, মিতাচার, মিতব্যয়িতা ও পারস্পরিক ভালোবাসার শিক্ষা দেয়। রমজানে বিশেষ বিশেষ ইবাদতের বিধান দেওয়া হয়েছে। যেমন—সিয়াম সাধনা, তারাবি, রোজাদারকে ইফতার করানো, ইতিকাফ, কোরআন তিলাওয়াত, দান-সদকা, সহমর্মিতা প্রকাশ, শবেকদর অন্বেষণ, ওমরাহ পালনসহ বহু ইবাদতের বিধান রয়েছে। ভাবার বিষয় হলো, আমরা কতটুকু আমল করতে পেরেছি, কতটুকু নিজেকে আলোকিত মানুষরূপে গড়ে তুলতে পেরেছি, রমজানের দাবি আমাদের জীবনে কী পরিমাণ বাস্তবায়িত হয়েছে—এসবের যোগ-বিয়োগ করার সময় এখনই।
সুফিবাদের পরিভাষায়, এই হিসাব-নিকাশ করাকে ‘মুহাসাবা’ বলা হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘মানুষের হিসাব-নিকাশের সময় ঘনিয়ে এসেছে, অথচ তারা এখনো উদাসীনতার মধ্যে বিমুখ হয়ে আছে। ’ (সুরা : আম্বিয়া, আয়াত : ১)
এ বিষয়ে ওমর (রা.)-এর একটি চমৎকার কথা আছে—‘তোমার হিসাব নেওয়ার আগে তুমি নিজেই তোমার হিসাব নিয়ে নাও। ’
তাই এখন সময় হিসাব-নিকাশের। জীবনে অগ্রযাত্রার জন্য প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির মূল্যায়ন খুবই জরুরি।
যদি প্রত্যাশিত প্রাপ্তি না হয়ে থাকে, তাহলে এখনো সুযোগ আছে তাওবা করার, নিজেকে শোধরে নেওয়ার ও অনুতপ্ত হয়ে প্রভুর দরবারে ফিরে আসার।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৪ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২৪