লাইলাতুল কদর, অতিশয় সম্মানিত ও মহিমান্বিত রাত বা পবিত্র রজনী। ফার্সি ভাষায় শাব ও আরবি ভাষায় লাইলাতুল অর্থ হলো রাত্রি বা রজনী, অন্যদিকে কদর শব্দের অর্থ সম্মান, মর্যাদা, মহাসম্মান।
এ রাতে সারা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ আল্লাহ তায়ালাকে বিশেষভাবে স্মরণ করেন। সারা রাত নফল নামাজ আদায়, জিকির-আজকারের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে নিজের জন্য পানাহ প্রার্থনা করেন। বান্দা নিজের ক্ষমা প্রার্থনার মাধ্যমে গুনাহ মাফ ও আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করেন।
পবিত্র এ রাতে অনেক আমল আছে যা মুসলিমরা করে থাকেন। কিছু বর্জনীয় আমলও আছে, যা মানা অতীব জরুরি। আসুন জেনে নিই শবে কদরে বর্জনীয় দিকগুলো কি কি...
অধিক বিশ্রাম ত্যাগ করা: অতি মহান, গুরুত্বপূর্ণ ও সওয়াব হাসিলের সবচেয়ে উত্তম ও তাৎপর্যময় রাত লাইলাতুল কদর, তাই এ রাতে ঘুম ও অন্যান্য বিশ্রাম সাধ্য পরিমাণ ত্যাগ করে ইবাদতে কাটিয়ে দেয়াই হচ্ছে বুদ্ধিমান ও মুমিনের কাজ। এ বিষয়ে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদরে ঈমান এবং সওয়াবের আশায় ইবাদতের জন্য আল্লাহর দরবারে দাঁড়াবে, তার অতীতের সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করা হবে। ’
অতিরিক্ত ভোজ-আয়োজন ত্যাগ করা: মূলত ইবাদতের প্রস্তুতি হল শরীর-মনকে হালকা রাখা, আর তা না করে অনেকেই এই কদরকে ঘিরে বিশাল-ভোজের আয়োজন করে, তাহলে এ রাতের মূল উদ্দেশ্য হাসিল করা কি সম্ভব? তাই করণীয় হলো- কদরকে সঠিকভাবে পালনের জন্য খাবার আয়োজন পরিবেশনে এবং ভক্ষণে সময় ও শ্রম ব্যয় না করে সেটিকে যথাযথ কাজে লাগানো, কারণ এই মহিমান্বিত রাত জীবনে আরেকবার পাবো, ইবাদত করতে পারবো, ক্ষমা চাইতে পারবো, দাঁড়াতে পারবো, চোখের পানি ফেলতে পারবো, যাবতীয় আঞ্জাম দিতে পারবো তার কোনো ইয়ত্তা নেই।
বিদআত বর্জন করা: ইসলাম কোনো কল্পনাপ্রসূত ধর্ম নয়, এটি একটি বিজ্ঞানভিত্তিক জীবন বিধান। এটি বাড়াবাড়ির পক্ষে নয়, কোরআন-সুন্নাহ বহির্ভূত কাজকে বিদআত বলা হয়। আর শবে কদরের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ রাতে বিদআতমুক্ত থেকে যথাযথভাবে ইবাদত-বন্দেগি করা ঈমানদারের কাজ। সেই সঙ্গে মানুষের ভুল দিক-নির্দেশনা বর্জন করা। সঠিকভাবে ইসলাম সম্পর্কে জেনে সে অনুযায়ী কাজ করা। এমন যেন না হয় যে, সওয়াব কামাতে গিয়ে আজাবের ভাগিদার হতে হয়।
রাসূল (সা.)-এর হাদিস থেকে পাওয়া যায়, এ রাতে হালকা বৃষ্টি হবে, এ রাত নাতিশীতোষ্ণ থাকবে। পরবর্তী দিবসে সূর্য এমনভাবে উদিত হবে যে, তার রশ্নিতে প্রখরতা ও তেজ থাকবে না। এ রাতে আসমানের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়, দোয়া কবুল হয়, ইবাদতে মশগুল বান্দাকে ফেরেশতারা সালাম দেয়, বান্দার দোয়ার সঙ্গে ফেরেশতারা আমিন আমিন বলতে থাকে। তাই আমাদের এ রাতের কাজগুলো বর্জনীয় দিক লক্ষ্য রেখে হক আদায় করা দায়িত্ব।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০২৪
এমজে