কবিরা গুনাহ কী অনেকেই মনে করেন, কবিরা গুনাহ মাত্র সাতটি, যার বর্ণনা একটি হাদিসে এসেছে। মূলত কথাটি ঠিক নয়।
কেননা হাদিসে বলা হয়েছে, উল্লিখিত সাতটি গুনাহ কবিরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত। এ কথা উল্লেখ করা হয়নি যে শুধু এ সাতটি গুনাহই কবিরা গুনাহ, আর কোনো কবিরা গুনাহ নেই। এ কারণেই আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, কবিরা গুনাহ সাত থেকে ৭০ পর্যন্ত। (তাবারি)
ইমাম শামসুদ্দিন জাহাবি (রহ.) বলেন, উক্ত হাদিসে কবিরা গুনাহের নির্দিষ্ট সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি। শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন, কবিরা গুনাহ হলো, যেসব গুনাহের কারণে দুনিয়াতে আল্লাহ তাআলা কর্তৃক শাস্তির বিধান আছে এবং আখিরাতে শাস্তির ধমক দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, যেসব গুনাহের কারণে কোরআন ও হাদিসে ঈমান চলে যাওয়ার হুমকি বা অভিশাপ ইত্যাদি এসেছে, তাকেও কবিরা গুনাহ বলে। ওলামায়ে কেরাম বলেন, তওবা ও ক্ষমা প্রার্থনার ফলে কোনো কবিরা গুনাহ অবশিষ্ট থাকে না। আবার একই সগিরা গুনাহ বারবার করার কারণে তা সগিরা (ছোট ) গুনাহ থাকে না। ওলামায়ে কেরাম কবিরা গুনাহের সংখ্যা ৭০টির অধিক উল্লেখ করেছেন। সেগুলো পর্যায়ক্রমে উল্লেখ করা হবে—
১ নম্বর কবিরা গুনাহ আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করা।
শিরক দুই প্রকার। এক. শিরকে আকবার, আল্লাহর সঙ্গে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করা। অথবা যেকোনো ধরনের উপাসনা আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছুর জন্য নিবেদন করা। যেমন—আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো উদ্দেশে প্রাণী জবেহ করা ইত্যাদি। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাআলা তাঁর সঙ্গে শিরক করাকে ক্ষমা করবেন না। তবে শিরক ছাড়া অন্য গুনাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন। ’ (সুরা নিসা, আয়াত ৪৮)
দুই. শিরকে আসগার বা ছোট শিরক। রিয়া অর্থাৎ লোক দেখানোর উদ্দেশ্য নিয়ে আমল করা ইত্যাদি। এটিও শিরক। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অতএব দুর্ভোগ সেসব মুসল্লির, যারা তাদের সালাত সম্পর্কে উদাসীন। যারা তা লোক দেখানোর জন্য করে। ’ (সুরা মাউন, আয়া ৪-৬)
হাদিস শরিফে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি অংশীদারি থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। যে ব্যক্তি কোনো কাজ করে আর ওই কাজে আমার সঙ্গে অন্য কাউকে শরিক করে, আমি ওই ব্যক্তিকে তার শিরকে ছেড়ে দিই। ’ (মুসলিম, হাদিস ৫৩০০)
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০২৪
এসআইএস