কিছু কাজ মানুষের আমল ধ্বংস করে দেয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা মানুষকে ঈমানহারাও করে দেয়।
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, তিন ব্যক্তির নামাজ তাদের মাথার এক বিঘত ওপরেও ওঠে না যে ব্যক্তি জনগণের অপছন্দ হওয়া সত্ত্বেও তাদের ইমামতি করে, যে নারী তার স্বামীর অসন্তুষ্টিসহ রাত যাপন করে এবং পরস্পর সম্পর্ক ছিন্নকারী দুই ভাই। (ইবনে মাজাহ, হাদিস ৯৭১)
অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তিন ব্যক্তির নামাজ তাদের কান ডিঙায় না (কবুল হয় না)।
পলায়নকারী দাস যে পর্যন্ত তার মালিকের কাছে ফিরে না আসে; যে মহিলা তার স্বামীর বিরাগ নিয়ে রাত কাটায় এবং যে ইমামকে তার সম্প্রদায়ের লোকেরা পছন্দ করে না। (তিরমিজি, হাদিস ৩৬০)
দ্বিতীয়ত, ওই সব নারী যে তার স্বামীর অসন্তুষ্টিসহ রাত যাপন করে। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, ‘কোনো পুরুষ নিজ স্ত্রীকে তার শয্যার দিকে ডাকলে সে যদি তাতে সাড়া না দেয়, অতঃপর তার স্বামী তার ওপর রাগান্বিত হয়ে রাত যাপন করে, তাহলে ফেরেশতারা তাকে সকাল পর্যন্ত অভিশাপ দিতে থাকে। ’ (বুখারি, হাদিস ৩২৩৭)
তবে কেউ অসুস্থ হলে কিংবা শরিয়ত সমর্থিত কোনো কারণ থাকলে সেটা অবশ্যই বিবেচ্য। মহান আল্লাহ কারো সাধ্যের বাইরে কোনো কিছু কারো ওপর চাপিয়ে দেন না।
তৃতীয় ব্যক্তির ব্যাপারে উপরোক্ত দুই হাদিসে দুই ধরনের বক্তব্য এসেছে। এক. পরস্পর সম্পর্ক ছিন্নকারী দুই ভাই। দুই. পলায়নকারী দাস যে পর্যন্ত তার মালিকের কাছে ফিরে না আসে।
বর্তমান যুগে যেহেতু দাসপ্রথা নেই, তাই এ বিষয়টা আর আলোচনার প্রয়োজনীয়তা রাখে না। কিন্তু শরিয়ত সমর্থিত কোনো কারণ ছাড়া কোনো মুসলমান ভাইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার সুযোগ নেই।
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখতেন। তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রাসুল, আপনি সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা রেখে থাকেন। তিনি বলেন, আল্লাহ তাআলা সোমবার ও বৃহস্পতিবার এই দুই দিন পরস্পর সম্পর্ক ছিন্নকারী দুই ব্যক্তি ব্যতীত প্রত্যেক মুসলমানকে ক্ষমা করেন। তিনি (ফেরেশতাদের) বলেন, তারা সন্ধিতে আবদ্ধ হওয়া অবধি তাদের ত্যাগ করো। (ইবনে মাজাহ, হাদিস ১৭৪০)
তাই নিছক নিজেদের হীন স্বার্থে কোনো মুসলমান ভাইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার অবকাশ নেই। যদি শুধু আল্লাহর জন্য কারো সঙ্গে সম্পর্ক করা জরুরি হয়ে পড়ে, সেটা ভিন্ন কথা।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২৪
এসআইএস