মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনুল কারিমে ইরশাদ করেন, كُلُّ نَفْسٍ ذَائِقَةُ الْمَوْتِ ۗ وَإِنَّمَا تُوَفَّوْنَ أُجُورَكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ۖ فَمَن زُحْزِحَ عَنِ النَّارِ وَأُدْخِلَ الْجَنَّةَ فَقَدْ فَازَ ۗ وَمَا الْحَيَاةُ الدُّنْيَا إِلَّا مَتَاعُ الْغُرُورِ
অর্থ: ‘প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। আর কেয়ামতের দিন তোমাদের পরিপূর্ণ বদলা দেওয়া হবে।
যেকোনো প্রাণীই হোক তার উপর মৃত্যু একবার আসবেই। ভালো হোক খারাপ হোক তাকে মরতেই হবে। আর তাই প্রত্যেক মুসলিম ব্যক্তির মৃত্যুর পর জানাজার নামাজের বিধান রয়েছে। যা মূলত মৃত ব্যক্তির আত্মার মাগফিরাত কামনার জন্য বিশেষ এক দোয়া। আর সে দোয়া ও দোয়া করার পদ্ধতি বিশ্বনবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের শিক্ষা দান করেছেন। এ দোয়ার মধ্যে রুকু-সিজদার বিধান নেই।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ভাবেই মুর্দার জন্য দোয়া শিখিয়েছেন। এটাই আসল। এর পর আমাদের জন্য কোনো কারণ খোঁজার দরকার নেই। (আল-বাহরুর রায়িক ২:১৮৩, ফাতাওয়া আলমগিরি, ১:১৬৪৩ বাদায়িউস সানায়ি ১:৩১৪)
আর জানাজা একধরনের নামাজ। এ নামাজ পড়ার নিয়ম হলো, ইমাম মৃতের বক্ষ বরাবর দাঁড়াবেন। (বুখারি ১২৪৬) ইমামের পেছনে মুক্তাদিদের কাতার হবে। (ইবনে হিব্বান ৩১০২)
জানাজার নামাজ মূলত মৃত ব্যক্তির পক্ষে শুধুই সুপারিশ ও দোয়া। আর রুকু-সিজদার কারণ ও উদ্দেশ্য এর বিপরীত। কেননা রুকু ও সিজদায় নিজের সর্বনিম্ন অক্ষমতা ও অপদস্থতা এবং আল্লাহ তাআলার সীমাহীন মর্যাদা, বড়ত্ব ও মহত্ত্ব প্রকাশ করা হয়। জানাজার নামাজে আল্লাহ তাআলার প্রশংসা, গুণাগুণ এবং অন্যদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা হয়। তাই জানাজার নামাজে রুকু-সিজদার বিধান দেওয়া হয়নি।
জানাজার নামাজ পড়া হয় লাশ সামনে রেখে। যদি অন্য নামাজের মতো জানাজার নামাজে রুকু-সিজদা করা হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের মধ্যে এ ধারণা হতে পারে যে লাশের উদ্দেশে বুঝি রুকু-সিজদা করা বৈধ।
সুতরাং লাশ সামনে রেখে রুকু-সিজদা করলে শিরকের সম্ভাবনা থেকে যায়। তাই মুসলিম উম্মাহকে শিরকি ধারণা থেকে বাঁচানোর জন্য জানাজার নামাজে রুকু-সিজদার বিধান দেওয়া হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০২৪
জেএইচ