ওমরাহ শব্দের অর্থ জিয়ারত করা, পরিদর্শন করা ও সাক্ষাৎ করা। পবিত্র কাবাগৃহের জিয়ারতই মূলত ওমরাহ।
মক্কায় পৌঁছার সামর্থ্য যার আছে, তার জন্য জীবনে একবার ওমরাহ করা সুন্নতে মুআক্কাদাহ এবং সামর্থ্য অনুযায়ী অধিক ওমরাহ করা মুস্তাহাব ও অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ আমল।
আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, الْعُمْرَةُ إِلَى الْعُمْرَةِ كَفَّارَةٌ لِمَا بَيْنَهُمَا وَالْحَجُّ الْمَبْرُورُ لَيْسَ لَهُ جَزَاءٌ إِلَّا الْجَنَّةَ
অর্থ: ‘এক ওমরাহর পর অন্য ওমরাহ উভয়ের মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহের জন্য কাফফারাস্বরূপ। আর কবুল হজের প্রতিদান হলো জান্নাত’। (সহিহ বুখারি: ১৭৭৩)
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত আরেকটি হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, تَابِعُوا بَيْنَ الْحَجِّ وَالْعُمْرَةِ فَإِنَّهُمَا يَنْفِيَانِ الْفَقْرَ وَالذُّنُوبَ كَمَا يَنْفِي الْكِيرُ خَبَثَ الْحَدِيدِ وَالذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ وَلَيْسَ لِلْحَجَّةِ الْمَبْرُورَةِ ثَوَابٌ إِلَّا الْجَنَّةَ
অর্থ: ‘ধারাবাহিকভাবে হজ ও ওমরার করতে থাক। কারণ এ ২টি দারিদ্র্য ও গুনাহ এমনভাবে দূর করে, যেমনভাবে হাঁপর লোহা ও সোনা-রুপার ময়লা দূর করে। মাবরুর হজের (সব রকম গুনাহ ও অশ্লীলতা থেকে পবিত্র) সওয়াব জান্নাত ব্যতীত আর কিছু নয়’। (সুনানে নাসাঈ: ২৬৩১, সুনানে তিরমিজি: ৮১০)
তবে বছরে ৫টি দিন ব্যতীত সারা বছর ওমরাহ পালন করা যায়। ওই ৫টি দিন হলো হিজরি ক্যালেন্ডারের জিলহজ মাসের ৯, ১০, ১১, ১২ ও ১৩ তারিখ। এ দিনগুলোতে ওমরাহ করা মাকরুহ তাহরিমি। এছাড়া সারা বছরই ওমরাহ করা জায়েজ ও সওয়াবের কাজ। বিশেষত রমজানে ওমরাহ করার বিশেষ ফজিলত বর্ণিত হয়েছে হাদিসে।
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, عُمْرَةٌ في رَمَضَانَ تَعْدِلُ حَجَّةً أَوْ حَجَّةً مَعِي
অর্থ: ‘রমজানের ওমরাহ একটি হজের সমতুল্য অথবা আমার সঙ্গে হজ করার সমতুল্য’। (সহিহ বুখারি: ১৭৮৬, সহিহ মুসলিম: ১২৫৬)
ওমরাহর ফরজ ২টি কাজ হলো (১) ইহরাম অর্থাৎ ওমরাহর নিয়ত করে ইহরামের পোশাক পরা ও তালবিয়া পড়া এবং (২) বাইতুল্লাহর তাওয়াফ করা। ওমরাহর ওয়াজিব ২টি কাজ হলো (১) সাফা মারওয়ার মাঝে সাঈ করা এবং (২) চুল মুণ্ডানো বা ছাটা।
ওমরাহ করার নিয়ম হলো মিকাত থেকে ইহরাম বেধে ইহরাম অবস্থায় কাবার চারপাশে তাওয়াফ করা, সাফা-মারওয়ার মধ্যখানে ৭ বার সাঈ করা, তারপর পুরুষরা নিয়ম অনুযায়ী মাথার চুল মুণ্ডন করা বা ছোট করা, নারীরা এক কর পরিমাণ চুল কাটা। এর মধ্যে ইহরাম পরিধান করা ও কাবা তাওয়াফ করা ফরজ। সাঈ করা ওয়াজিব। তারপর ইহরাম থেকে হালাল হতে হয় মাথার চুল কেটে বা মুণ্ডন করে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, মে ১০, ২০২৪
জেএইচ