ঢাকা, শুক্রবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

শয়তান যেভাবে আসমান থেকে বিতাড়িত হয়

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১০ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২৪
শয়তান যেভাবে আসমান থেকে বিতাড়িত হয়

মহাকাশে ফেরেশতাদের রাজ্যে প্রবেশ করা সহজ ব্যাপার নয়। শয়তানকে যদিও প্রবল প্রতাপ দেওয়া হয়েছে, তবু সে সেখানে গিয়ে অদৃশ্য খবর সংগ্রহ করতে পারে না।

তবে শয়তান এর জন্য চেষ্টা অব্যাহত রাখে। কিন্তু মহান আল্লাহ সে অনুমতি তাকে দেননি।

শয়তান আল্লাহর ক্রোধের শিকার হয় এবং জ্বলন্ত উল্কাপিণ্ডের আঘাতে আকাশ থেকে দূরে নিক্ষিপ্ত হয়। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘আমি (আল্লাহ) প্রত্যেক বিতাড়িত শয়তান থেকে আকাশকে নিরাপদ করে দিয়েছি। ’ (সুরা : হিজর, আয়াত : ১৭)

ইবনে আব্বাস (রা.) উল্লিখিত আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেছেন, একসময় আকাশে শয়তানের প্রবেশাধিকার ছিল। শয়তানরা আকাশে গিয়ে ফেরেশতাদের কথোপকথন থেকে গায়েব বা অদৃশ্যের কিছু খবরাখবর শুনত।

পরে সেগুলো পাদরি বা জ্যোতির্বিদদের কাছে বলত। ঈসা (আ.)-এর জন্মের পর প্রথম তিন আসমানে তাদের প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত করা হয়। আর মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্মের পর সব আসমানে শয়তানদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। এর পর থেকে যখনই কোনো শয়তান ঊর্ধ্বাকাশে উঠতে চেষ্টা করে, জ্বলন্ত আগুন বা উল্কা তাকে ধাওয়া করে। (তাফসিরে রাজি : ৯/১৬৯, কাশশাফ : ২/১৮৮)

ইসলামের ইতিহাসের সঙ্গে পরিচিত কারো কারো মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, ঊর্ধ্বাকাশে যদি শয়তানদের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়ে থাকে, তাহলে আদি পিতা আদম (আ.) ও আদি মাতা হাওয়া (আ.)-কে জান্নাতে শয়তান কীভাবে প্ররোচিত করল? এ প্রশ্নের জবাব ইবনে আব্বাস (রা.)-এর কথায় রয়েছে। অর্থাৎ একসময় যেহেতু ঊর্ধ্বাকাশে শয়তান প্রবেশ করতে পারত, তাই বলা যায় যে আদম (আ.)-এর ঘটনা তার প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ হওয়ার সময়ের আগের। তখন পর্যন্ত শয়তানদের আকাশে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ ছিল না। পরে পর্যায়ক্রমে ঊর্ধ্বাকাশে শয়তানদের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়।

বুখারি শরিফে বর্ণিত একটি হাদিস থেকে জানা যায়, কখনো কখনো ফেরেশতারা আকাশের নিচে মেঘমালার স্তরে আসতেন এবং আকাশের খবরাদি পরস্পর আলোচনা করতেন। শয়তানরা শূন্যে আত্মগোপন করে এসব সংবাদ শুনত। মুহাম্মদ (সা.)-এর আবির্ভাবের পর উল্কাপাতের মাধ্যমে এই সুযোগও বন্ধ করে দেওয়া হয়। এটা করা হয়েছে ওহির হেফাজত ও বিশেষ সুরক্ষার তাগিদে।

এ আলোচনা থেকে কয়েকটি বিষয় জানা যায় :

প্রথমত, শয়তান দুনিয়ার মানুষকে যেভাবে বিভ্রান্ত করে থাকে, মহাকাশের বাসিন্দা বা ফেরেশতাদের সেভাবে বিভ্রান্ত করতে পারে না। বরং মহাকাশে উঠতে চাইলে গতিপথ রুদ্ধ করা হয়।

দ্বিতীয়ত, শয়তানের প্ররোচনামুক্ত থাকায় ফেরেশতাদের মধ্যে পাপাচার বা আল্লাহর অবাধ্যতার কল্পনাও জাগ্রত হয় না।

তৃতীয়ত, ঊর্ধ্বাকাশের কোনো খবরাখবর শয়তানের পক্ষেও জানা সম্ভব নয়।

চতুর্থত, নবী-রাসুলদের কাছে প্রেরিত ওহি ছাড়া ঊর্ধ্বজগতের কোনো বার্তা জানা মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়।

বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২৪
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।