মানুষের চিন্তা ও গবেষণালব্ধ জ্ঞানকে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য বাঁচিয়ে রাখার প্রয়োজনীয়তা থেকেই লাইব্রেরির সৃষ্টি। বিশ্বের প্রথম ও বিখ্যাত লাইব্রেরি হলো- মিসরের আলেকজান্দ্রিয়া লাইব্রেরি।
ঐতিহাসিক ও বিখ্যাত এই লাইব্রেরিতে এবার প্রতিস্থাপন করা হলো ১৮৩০ সালে ব্যবহৃত কাবা শরিফের পবিত্র গিলাফের একটি অংশ। কাবা শরিফের ওই গিলাফের অংশটুকু লাইব্রেরিতে উপহার হিসেবে প্রদান করা হয়েছে।
২২ আগস্ট এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গিলাফের অংশটুকু হস্তান্তর করা হয়। অনুষ্ঠানে লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষ, দেশটির সংসদ সদস্য ও বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা উপস্থিত ছিলেন।
কাবা শরিফের পবিত্র গিলাফের ওই অংশটির মালিক ছিলেন মিসরের নাগরিক ইয়াশার হিলমি। তিনি ঐতিহাসিক ও অমূল্য এ জিনিসটি স্বেচ্ছায় লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষকে প্রদান করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই লাইব্রেরিতে পবিত্র কাবা ঘরের গিলাফ অনুদানের ঘটনাটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। গিলাফের এই অংশটি শুধুমাত্র একটি ঐতিহাসিক শিল্প নয়; গিলাফের অংশের সঙ্গে ধর্মীয় ঐতিহ্যও মিশ্রিত রয়েছে। আমার ইচ্ছা মানুষ এটাই দেখুক ও অনুধাবন করুক।
গিলাফ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে আলেকজান্দ্রিয়া লাইব্রেরির পরিচালক ইসমাইল সিরাজ উদ্দিন বলেন, পবিত্র কাবার গিলাফের এই অংশটুকু তুরস্কে বানানো হয়েছিল। এটি ইসলামি ঐতিহ্যের সবচেয়ে সুন্দর শিল্প। যা মিসরের সবচেয়ে দক্ষ তাঁতি কর্তৃক লাল এবং কালো রং ব্যবহার করে বানানো হয়েছিল।
কাবা শরিফের পবিত্র গিলাফটি দর্শনার্থীদের পরিদর্শনের জন্য লাইব্রেরির প্রবেশ মুখেই রাখা হয়েছে। গিলাফটি স্থাপনের পর থেকিই বিপুল পরিমাণের দর্শক গিলাফটি পরিদর্শন শেষে ছবি তুলছেন।
উল্লেখ্য যে, প্রায় ৬০০ বছর পূর্ব থেকে পবিত্র কাবা ঘর গিলাফ বা পর্দা দ্বারা আচ্ছাদিত করে রাখার রীতি চলে আসছে। কাবার গিলাফ বিভিন্ন মুসলিম দেশের বাদশাহরা প্রেরণ করতেন। আগেকার দিনে কাবা ঘরের জন্য গিলাফ হাতে বোনা হতো। কালো খাঁটি সিল্কের প্রায় ৫০টি টুকরা কাপড়ের মাধ্যমে পুরো গিলাফ প্রস্তুত করা হতো। কাপড়ের ওপর সোনা ও রুপা মিশ্রিত সূতা দিয়ে বিভিন্ন আয়াত ও হাদিস লেখা হতো। এখন শুধু কাবার গিলাফ প্রস্তুতের জন্য মক্কায় আলাদা কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। এ কারখানায় তৈরিকৃত গিলাফ দ্বারা কাবাকে আচ্ছাদিত করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৬
এমএইউ/