তুরস্কের নারী পুলিশ সদস্যদের হিজাব পরতে আর কোনো বাধা নেই। তুরস্ক সরকার ঘোষণা দিয়েছে, পুলিশের নারী সদস্যরা চাইলে এখন থেকে স্কার্ফ পরতে পারবেন।
শনিবার (২৭ আগস্ট) তুর্কি সরকার এক ঘোষণায় জানায়, পুলিশের নারী সদস্যদের হিজাব পরায় যে নিষেধাজ্ঞা ছিল, তা প্রত্যাহার করা হলো। এর মধ্য দিয়ে বহুল আলোচিত একটি ইস্যুতে শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্তে এলো তুরস্ক কর্তৃপক্ষ।
ওই ঘোষণায় বলা হয়েছে, এখন থেকে পুলিশের নারী সদস্যরা হিজাব পরতে পারবেন, তবে তা হতে হবে একরঙা এবং পুলিশের পোশাকের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। এ ছাড়া অন্য যেসব প্রতিষ্ঠানে হেডস্কার্ফ বা হিজাব পরে যাওয়া নিষিদ্ধ ছিলো- সেসব প্রতিষ্ঠানেও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপনও জারি করেছে তুরস্ক সরকার। সাংবিধানিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র তুরস্কের রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে এটি একটি যুগান্তকারী ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
শতকরা নিরান্নব্বই ভাগ মুসলমান অধ্যূষিত তুরস্কে ১৯৮৪ সালে বোরকা পরে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। ফলে শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রী ও শিক্ষিকারা, অফিস-আদালত, সেনাবাহিনী, পুলিশসহ সবক্ষেত্রে হিজাব পরিহিত নারীরা নানা বঞ্চনা, নির্যাতন ও রাষ্ট্রীয় বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছিলেন। এ নিষেধাজ্ঞা ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বহাল ছিল।
এরদোগান নেতৃত্বাধীন একে পার্টি ক্ষমতায় আসার পর সর্বপ্রথম ২০০৮ সালের ৯ ফেব্রুয়ারিতে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে হিজাব পরে ক্লাশ ও পরীক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে পূর্বের নিষেধাজ্ঞা বাতিল করে দেশটির সংসদ।
তারপর ২০১৩ সালে সরকারি অফিস আদালতে হিজাব পরে কাজ করা ও জনসম্মুখে চলাফেরার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।
সর্বশেষ মহিলা পুলিশদের হিজাব পরে ডিউটি পালনের অনুমতি প্রদান সম্বলিত আদেশ জারি করা হলো।
সম্প্রতি মুসলিম নারীদের পুলিশে নিয়োগের ক্ষেত্রে কানাডা সরকার ও স্কটল্যান্ড প্রশাসন ইউনিফর্ম হিসেবে হিজাব পরার অনুমতি প্রদান করেছে।
-বিবিসি অবলম্বনে
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১৬
এমএইউ/