আজ পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদুল আজহা শুধু উৎসবের দিন নয়, এটা ইবাদতেরও দিন।
এক. দুই রাকাত ঈদের নামাজ আদায় করা ওয়াজিব। কোনো অবস্থায়ই ঈদের নামাজ আদায়ে অলসতা করা যাবে না। শিশু-সন্তানদের ঈদের নামাজে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। মনে রাখতে হবে ঈদের নামাজ ইসলামের একটি মহান নিদর্শন।
হজরত উমর (রা.) বলেন, জুমার নামাজ দু’ রাকাত, ঈদুল ফিতরের নামাজ দু’রাকাত, ঈদুল আজহার নামাজ দু’ রাকাত ও সফর অবস্থায় নামাজ হলো দু’ রাকাত। -নাসায়ি
দুই. ঈদের নামাজ আদায় করার পর সামর্থ্যবান ব্যক্তি কোরবানি করবে। পবিত্র কোরআনে কারিমে বলা হয়েছে, ‘তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে নামাজ আদায় কর ও পশু কোরবানি কর। ’ -সূরা আল কাওসার: ২
হাদিসে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কোরবানি করে না সে যেন আমাদের ঈদগাহের ধারে না আসে। -আহমাদ ও ইবনে মাজা
তিন. তাকবির পাঠ করার মাধ্যমে আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ করা। ঈদুল আজহার অন্যতম করণীয় হচ্ছে এ দিনের তাকবির। এ ঈদকে যেভাবে পরবর্তী তিন দিন পর্যন্ত দীর্ঘায়িত করা হয়েছে সেভাবে এ দিনের তাকবিরকেও দীর্ঘায়িত করা হয়েছে। ইবনে আবি শাইবা তার মুসান্নাফে বর্ণনা করেন, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) নিম্নোক্ত তাকবিরটি বলতেন—
‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ। ’
চার. ঈদগাহে পায়ে হেঁটে যাওয়া এবং এক পথে যাওয়া ও অন্যপথে আসা। এটা সুন্নত আমল। হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘সুন্নাত হলো- ঈদগাহে পায়ে হেঁটে যাওয়া। ’ –তিরমিজি
আরেক হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘নবী করীম (সা.) ঈদের দিনে পথ বিপরীত করতেন। ’ –সহিহ বোখারি
পাঁচ. ঈদের সময় বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনের খোঁজ-খবর নেওয়া ও তাদের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া ও প্রতিবেশীর হক আদায়ের সুযোগ তৈরি হয়। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা ইবাদাত কর আল্লাহর, তার সঙ্গে কোনো কিছুকে শরিক করো না। আর সদ্ব্যবহার কর মাতা-পিতার সঙ্গে, নিকট আত্মীয়ের সঙ্গে, ইয়াতীম, মিসকিন, প্রতিবেশী, অনাত্মীয় প্রতিবেশী, পার্শ্ববর্তী সাথী, মুসাফির এবং তোমাদের মালিকানাভুক্ত দাস-দাসীদের সঙ্গে। নিশ্চয় আল্লাহ পছন্দ করেন না তাদেরকে, যারা দাম্ভিক, অহঙ্কারী। ’ -সূরা নিসা: ৩৬
ছয়. ঈদে পরস্পরকে শুভেচ্ছা জানানো শরিয়ত অনুমোদিত একটি বিষয়। বিভিন্ন বাক্য দ্বারা এ শুভেচ্ছা বিনিময় করা যায়। যেমন-
ক. হাফেজ ইবনে হাজার (রহ.) বলেছেন, সাহাবায়ে কেরাম ঈদের দিন সাক্ষাৎকালে একে অপরকে বলতেন- ‘তাকাব্বাল্লাল্লাহু মিন্না ওয়ামিনকা’ অর্থ- আল্লাহতায়ালা আমাদের ও আপনার ভালো কাজগুলো কবুল করুন।
খ. ‘ঈদ মোবারক বা ঈদ মোবারক ইনশাআল্লাহ বলে অভিনন্দন জানানো যায়।
গ. ‘ঈদুকুম সাঈদ’ শব্দ দিয়েও ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করা যায়।
বাংলাদেশ সময়: ০০০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১
এমএইউ/