মাদরাসার প্রতি ধর্মপ্রাণ মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ, সাহায্য আদায় কিংবা মনোযোগ বাড়ানোর জন্য অনেকেই ‘মসজিদ আল্লাহর ঘর আর মাদরাসা রাসূলের ঘর’ কথাটি বলে থাকেন। এমনকি আলেম-উলামাদের মুখে এ কথা বলতে শোনা যায়।
এখানে লক্ষণীয় যে, উপরোক্ত কথায় দু’টি বাক্য রয়েছে। প্রথম বাক্যটি হলো, ‘মসজিদ আল্লাহর ঘর। ’ এ কথা পবিত্র কোরআন ও হাদিস দ্বারা সমর্থিত। প্রায় এর কাছাকাছি শব্দ বিভিন্ন হাদিসেও বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু দ্বিতীয় বাক্য অর্থাৎ ‘মাদরাসা রাসূলের ঘর’ এটি কোনো হাদিস নয়। কেউ এটাকে হাদিস হিসেবে বললে তা সঠিক হবে না।
তবে একথা বলাই বাহুল্য যে, ‘মাদরাসা’ যেখানে দ্বীন শিক্ষা দেওয়া হয়, পবিত্র কোরআন-হাদিসের শিক্ষা দেওয়া হয়, আল্লাহ ও রাসূলের কথা আলোচনা করা হয়- তা নিঃসন্দেহে উত্তম জায়গা। এ সব স্থান ফেরেশতারা ঘিরে রাখেন এবং সেখানে আল্লাহর রহমত, বরকত অবতীর্ণ হয়।
অতএব ওই সব ঘরও আল্লাহ ও রাসূলেরই ঘর। কিন্তু তাই বলে ‘মাদরাসা রাসূলের ঘর’ বাক্যটিকে হাদিস হিসেবে বলার কোনো সুযোগ নেই। কারণ হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কথাটি বলেছেন তার কোনো প্রমাণ নেই। আর মসজিদ-মাদরাসার মধ্যে এভাবে বিভাজন টানাও অনুচিত।
হাদিসের নামে মিথ্যা বলা ও মানুষের কথাকে হাদিস বলে প্রচার কার জঘন্যতম পাপ ও অপরাধ। এ বিষয়ে ইসলামি স্কলারদের মাঝে কোনো দ্বিধা নেই। ইসলামি শরিয়তের বিধিবিধান পালন কিংবা মানুষকে নেককাজে উৎসাহ প্রদান, পাপের ভীতি কিংবা অন্য যেকোনো বিষয়েই হোক- এভাবে মিথ্যা বলা কঠিনতম হারাম ও ভয়ঙ্করতম কবিরা গোনাহ। আল্লাহতায়ালা আমাদের এমন গোনাহ থেকে বাঁচিয়ে রাখুন। আমিন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৬
এমএইউ/