ঢাকা, শুক্রবার, ৫ পৌষ ১৪৩১, ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

সাংবাদিক তুরাব হত্যা: সাবেক এডিসি দস্তগীর ৫ দিনের রিমান্ডে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৪
সাংবাদিক তুরাব হত্যা: সাবেক এডিসি দস্তগীর ৫ দিনের রিমান্ডে সাবেক এডিসি দস্তগীরকে নেওয়া হচ্ছে আদালতে

সিলেট: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় সিলেটে সাংবাদিক এটিএম তুরাব হত্যা মামলার আসামি এসএমপির সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার সাদেক কাওসার দস্তগীরের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।  

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর)  বিকেল সোয়া ৫টার দিকে অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের তাকে হাজির করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক মোহাম্মদ মোরসালিন।

শুনানি শেষে  আদালতের বিচারক আব্দুল মোমেন এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এরআগে আদালতে সেনা ও পুলিশি কড়া পাহারায় প্রিজন ভ্যানে করে দস্তগীরকে আদালতে হাজির করা হয়।  

এদিন সকালে তাকে আদালতে হাজির করার কথা থাকলে জনরোষ থেকে রক্ষায় সেনা বাহিনীর সহায়তায় পুলিশ তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই।

তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই সিলেটের পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ মোরসালিন বলেন, আদালতে আসামির ৭দিনের রিমান্ড আবেদন করলে বিচারক তার ৫দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুর রব বলেন, আসামি দস্তগীর একজন সিরিজ কিলার। আদালতে তার রিমান্ড আবেদন চাইলে বিচারক সন্তুষ্ট হয়ে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

এরআগে বুধবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে মৌলভীবাজার জেলার শেরপুর কর্মস্থল থেকে তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে পিবিআই সিলেটের পুলিশ সুপার খালেদ-উজ-জামান বলেন, সাদেক কাওসার দস্তগীরকে তার বর্তমান কর্মস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গত ১৯ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে দায়িত্ব পালনকালে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সাংবাদিক এটিএম তুরাব। তিনি দৈনিক নয়া দিগন্তের সিলেট প্রতিনিধি ও দৈনিক জালালাবাদের স্টাফ রিপোর্টার ছিলেন। ঘটনার পর একটি ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, ঘটনার দিন ১৯ জুলাই দুপুর ২টার দিকে নগরের কোর্ট পয়েন্টে বিএনপির মিছিলে পেছন থেকে গুলি ছুড়ে পুলিশ। ওই সময় সিলেট মহানগর পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সাদেক কাওসার দস্তগীর একজন কনস্টেবলের হাত থেকে অস্ত্র নিয়ে গুলি ছুড়েন। পুলিশের ছোড়া গুলিতে গুরুতর আহত সাংবাদিক এটিএম তুরাব ওইদিন সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে তার দেহে ৯৮টি স্প্লিন্টার্স বিদ্ধ হয়, জানান চিকিৎসক। এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। কিন্তু পরিবারের পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলা নেওয়া হয়নি।

৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর গত ১৯ আগস্ট সিলেটের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক আব্দুল মোমেনের আদালতে হত্যা মামলা করেন নিহতের ভাই আবুল হাসান মো. আজরফ (জাবুর)। মামলাটি কোতোয়ালি থানাকে রেকর্ড করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়।

ওই মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার (ক্রাইম, উত্তর) মো. সাদেক দস্তগীর কাউছার, উপকমিশনার (উত্তর) অতিরিক্ত ডিআইজি আজবাহার আলী শেখসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া মামলায় আরও ২০০ থেকে ২৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।

ঘটনার পর অতিরিক্ত উপকমিশনার (ক্রাইম, উত্তর) মো. সাদেক দস্তগীর কাউছার, উপ কমিশনার (উত্তর) অতিরিক্ত ডিআইজি আজবাহার আলী শেখকে সিলেট থেকে বদলি করা হয়।

গত ৮ অক্টোবর আদালতের নির্দেশে চাঞ্চল্যকর এ মামলার নথিপত্র কোতোয়ালি থানা পুলিশ পিআইবিকে বুঝিয়ে দেয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই’র ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ মোরসালিন গত ১৭ নভেম্বর রাতে তুরাব হত্যা মামলার আরেক আসামি কনস্টেবল উজ্জ্বল সিংহাকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেন। পরদিন আদালতে তার ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে শুনানি শেষে বিচারক ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

অবশেষে মামলা দায়েরের চার মাসের মাথায় উল্লেখযোগ্য আসামিকে গ্রেপ্তার করে সাদেক দস্তগীর কাউছারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেওয়া হলো।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৪
এনইউ/জেএইচ


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আইন ও আদালত এর সর্বশেষ