টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলে গত কয়েক দিন যাবত উত্তরের বাতাস বইছে। এতে করে প্রতিদিনই তাপমাত্রা কমছে, বিপর্যস্ত হচ্ছে জনজীবন।
এদিকে তীব্র শীতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের লোকজন। তবে, এখনো পর্যন্ত টাঙ্গাইলে কোনো জনপ্রতিনিধি ও সরকারি দপ্তরের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
গত দুই দিনে টাঙ্গাইলের আকাশে সূর্য দেখা যায়নি। কুয়াশার কারণে সরিষা ও বোরো মৌসুমের বীজতলার ক্ষতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকরা।
জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, কয়েক দিন যাবত টাঙ্গাইলে উত্তরের হিমেল বাতাস বইছে। আরও ৪/৫ দিন এই বাতাস থাকতে পারে। মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) টাঙ্গাইলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও বুধবার ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সরেজমিন টাঙ্গাইল পৌরসভার আকুর টাকুর পাড়া, কাগমারা, এনায়েতপুর, বাঘিল ইউনিয়নের দুরিয়াবাড়ী, ধরেরবাড়ী, টাবলাপাড়া, যুগনী, দাইন্যা ইউনিয়নের বাউসা, বাইমাইল ও পোড়াবাড়ী ইউনিয়নের খাড়জানাসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি এলাকাতেই উত্তরের তীব্র ঠাণ্ডা বাতাস বইছে। শীতের কারণে অনেকেই ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। কেউ কেউ গরম পোশাক পরে নিজ নিজ গন্তব্যে যাচ্ছেন। আবার অনেককেই আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা গেছে। কাগমারা ও দুরিয়া বাড়ি এলাকায় সরিষা ও বোরোর বীজতলা ক্ষতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকরা।
এনায়েতপুর এলাকার আনিসুর রহমান জানান, তিনি ৩০ কেজি বোরো ধানের বীজতলা করেছেন। কিন্তু শীতের কারণে তেমন ভাল হচ্ছে না। এই এলাকার কৃষি অফিসার পরিবর্তন হওয়ার পর প্রায় দেড় বছর যাবত কৃষি অফিসারের কোনো পরামর্শ তারা পান না। এতে তার এলাকার কৃষকরা পরামর্শের অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
জেলা কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আহসানুল বাসার বলেন, বর্তমানে টাঙ্গাইলে যে তাপমাত্রা আছে, এতে কোনো ফসলের ক্ষতি হবে না। এতে সরিষা ও গমের উপকার হবে। কয়েক দিন রোদ উঠলে সবজির জন্যও উপকার হবে। তবে টানা ১০ দিন এই অবস্থা থাকলে বোরো বীজতলা ‘কোল্ড ইনজুরিতে’ পড়ে। হলুদ রঙের হলেও তেমন ক্ষতি হয় না। স্বাভাবিক হয়ে যায়।
টাঙ্গাইল আবহাওয়া অধিদপ্তরের ইনচার্জ জামাল উদ্দিন বলেন, জেলায় যে বাতাস বইছে এটাকে শৈত্য প্রবাহ বলা যায় না। ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলে সেটাকে শৈত প্রবাহ বলে। দিনের বেলায় সূর্যের আলো না দেখার কারণে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বাড়ছে না। আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা না বাড়ার কারণে সর্বনিম্নটা কাছাকাছি। অন্যান্য দিনের তুলনায় শীতের প্রকোপটা একটু বেশি অনুভূত হচ্ছে। এই অবস্থা আরও ৪/৫ দিন থাকতে পারে।
জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার বলেন, প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল থেকে ৬০ হাজার কম্বল ১২ উপজেলায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও স্থানীয়ভাবে পাঁচ হাজার কম্বরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দ্রুততম সময়ে মধ্যে সেগুলো জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা, আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা ও জনসাধারণের মাঝে বিতরণ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০২৩
এমএমজেড