ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নারী নিপীড়নকারী লিটনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সিলেটে মানববন্ধন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০২৩
নারী নিপীড়নকারী লিটনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সিলেটে মানববন্ধন

সিলেট: নারী নিপীড়নে অভিযুক্ত সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সিলেটের সভাপতি আমিনুল ইসলাম চৌধুরী লিটনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলা হয়েছে।  

সোমবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে নগরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংক্ষুব্ধ নাগরিক মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তারা এ দাবি করেন।

 

বক্তারা বলেন, আমিনুল ইসলাম লিটনের বিরুদ্ধে অনেক নারী নিপীড়নের অভিযোগ তুলেছেন। ক’দিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে তোলপাড় চলছে। এমনকি লিটনের সঙ্গে ভুক্তভোগীদের কথোপকথনের অডিও রেকর্ডও ফাঁস হয়েছে। যাতে লিটনকে নিপীড়নের অভিযোগ স্বীকার করতে শোনা যায়।  

বক্তারা বলেন, নারী নিপীড়ন দণ্ডনীয় অপরাধ, এটি সামাজিকভাবে সমাধানের বিষয় নয়। তাই এমন ঘৃণ্য অপরাধীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে।

সংক্ষুব্ধ নাগরিক আন্দোলন আয়োজিত কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন, ছাত্র ইউনিয়ন, সাংস্কৃতিক ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টসহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।  

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নাজিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাংস্কৃতিক সংগঠক পান্না জান্নাতের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংক্ষুব্ধ নাগরিক আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল করিম কিম, সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমদ, সাংস্কৃতিক সংগঠক অম্বরিশ দত্ত, নিরঞ্জন দে যাদু, এনামুল মুনির, ভূমিসন্তান বাংলাদেশ সমন্বয়ক আশরাফুল কবির, যুব ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিউর রহমান, ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি শহিদুজ্জামান পাপলু প্রমুখ।  

বক্তারা আরো বলেন, লিটনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে নারী ও শিশু নিপীড়নের অভিযোগ থাকলেও প্রকাশ্যে কেউ প্রতিবাদ জানানোর সাহস করেননি।  
সম্প্রতি যৌন নিগ্রহের শিকার এক নারী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিযোগ তুললে, বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।  

বক্তারা এমন গুরুতর অপরাধে জড়িতদের সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সব কর্মকাণ্ড থেকে বহিষ্কার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। সেসঙ্গে যৌন হয়রানি বন্ধে যৌন নিপীড়ন বিরোধী বিশেষ সেল গঠন করা হচ্ছে বলেও জানান বক্তারা।  

আমিনুল ইসলাম লিটনের বিরুদ্ধে নিপীড়নের অভিযোগ তুলেন তার থিয়েটারেরই এক নারী কর্মী। এ নিয়ে আরও কয়েক নারী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিটনের বিরুদ্ধে নিপীড়নের অভিযোগ তোলেন। সেসঙ্গে কয়েকজন শিশু বয়সে নিপীড়িত হওয়ারও অভিযোগ তোলেন। সমালোচনা যখন চলছিল, তখন আমিনুল ইসলাম লিটনের সঙ্গে ভুক্তভোগী দুই তরুণীর আলাপের দুটি অডিও ক্লিপও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ছড়িয়ে পড়া অডিও ক্লিপে পুরুষ কণ্ঠে নিপীড়নের দায় স্বীকার করে ক্ষমা চাইতে শোনা যায়।  

যদিও রোববার (৯ এপ্রিল) আমিনুল ইসলাম লিটন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসব অভিযোগ মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করেছেন। একইসঙ্গে ছড়িয়ে পড়া অডিও ক্লিপও তার নয় দাবি করে বলেন, এগুলো তার কণ্ঠের মতো করে এডিট করা হয়েছে।  

যদিও নারী নিপীড়নের অভিযোগ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে রোববার সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সিলেটের সভাপতির পদ থেকে লিটনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে দ্বৈতস্বরের প্রতিনিধি হিসেবে পাওয়া তার জোটের প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য পদ বাতিল করা হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ২১১৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০২৩
এনইউ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ