ঢাকা: ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকার ঐতিহ্যবাহী ও গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলোকে নিয়ে সাতটি ‘ঐতিহ্য বলয়’ সৃষ্টি চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সুধীজন, কাউন্সিলর ও পরামর্শকসহ সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনদের নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে নগর ভবনের বুড়িগঙ্গা হলে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, প্রস্তাবিত সাতটি বলয় নিয়ে একসঙ্গে কাজ করা, সেগুলোর প্রয়োজনীয় সংস্কার ও দখলমুক্ত করা সম্ভব নয়। এ বলয় কার্যকর করতে আমরা একটি একটি করে আগাতে চাইছি। সেজন্য প্রথমে একটি বলয়কে কেন্দ্র করে তা কার্যকর করতে চাইছি। সে লক্ষ্যে আজকের এ আলোচনা সভা। আপনাদের সবার মতামত ও পরামর্শের ভিত্তিতে এ কার্যক্রমে ভুল-ত্রুটি সংশোধন করে পরবর্তী পর্যায়ে আমরা বাকি বলয়গুলো নিয়ে কাজ করব। আমরা একটি বলয় কার্যকর করতে পারলে তা জনগণের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা বৃদ্ধি করবে, তাদের অংশগ্রহণ বাড়াবে। এভাবে ধীরে ধীরে ঢাকাবাসী ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে নিয়ে আমরা বাকি বলয়গুলো সৃষ্টি করব। ঢাকার পর্যটন শিল্পকে আমরা সবাই মিলে বিশ্ব দরবারে গৌরবান্বিত করতে পারব।
পর্যটন খাতকে শৃঙ্খলিত করার পাশাপাশি পর্যটকদের স্বাচ্ছন্দ দিতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে তাপস বলেন, মূলত এ জায়গায় পরিকল্পিত ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার আওতায় আনতে হবে। তাহলে পর্যটকরা আরও স্বাচ্ছন্দ বোধ করবে, আসতে চাইবে এবং যেমনি আসতে চাইবে তেমনি চলেও যেতে পারবে। তখন সুনির্দিষ্ট স্থান থেকে যাত্রা শুরু করে আমাদের ঐতিহাসিক স্থাপনা পরিদর্শন ও সেসব স্থাপনার সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবে।
সভায় বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় পর্যটন শিল্পের ইতিহাস ও ঐতিহ্য অত্যন্ত সমৃদ্ধ। ঢাকায় গেজেটভুক্ত ৭৪টি হেরিটেজ ভবনের মধ্যে ৬৬টি ভবনের অবস্থান দক্ষিণ সিটিতে। সেসব ভবনকে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে নান্দনিকভাবে উপস্থাপন ও আমাদের পর্যটন শিল্পের প্রসারের লক্ষ্যে করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের এ উদ্যোগ আশার সঞ্চার করছে। আমরা অত্যন্ত আশাবাদী। কিন্তু সেজন্য সব অংশীজনদের এগিয়ে আসতে হবে। ওনাকে সহযোগিতা করলে ঢাকার পর্যটন খাতের পাশাপাশি আমাদের সমৃদ্ধ ইতিহাস-ঐতিহ্য পুনরায় প্রস্ফুটিত হবে।
আলোচনা সভায় ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসেফিকের অধ্যাপক আবু সাঈদ এম আহমেদ প্রস্তাবিত সাতটি ঐতিহ্য বলয়ের গতিপথ বিস্তারিত উপস্থাপন করেন। গেজেটভুক্ত ৬৬টি ভবন বাদেও গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু ভবন নিয়ে সাতটি ঐতিহ্য বলয়ের গতিপথের খুটিনাটি জানান।
সভায় সংশ্লিষ্ট অংশীজনরা তাদের নিজ নিজ গুরুত্বপূর্ণ মতামত দেন।
সভায় অন্যদের মধ্যে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান মনোজ কুমার রায়, দক্ষিণ সিটির প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্যিক) শাহ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, করপোরেশনের অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন সরকার, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের উপ-সচিব মোহাম্মদ সাইফল হাসানসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২৩
এইচএমএস/আরবি