খুলনা: রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে অপরাজিতাদের মতবিনিময় সভায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল থেকে ৩৩ শতাংশ নারীকে নমিনেশন দেওয়া দাবি জানানো হয়েছে।
এছাড়া রাজনৈতিক দলের কমিটিগুলোতে ২০২৫ সালের মধ্যে ৩৩ শতাংশ নারী অর্ন্তভুক্ত করা এবং রাজনৈতিক দলের সম্পাদকমণ্ডলী বিশেষ করে সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ম সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক পদগুলোর মধ্যে যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ পদে নারী অন্তর্ভুক্তিকরণের দাবি জানানো হয়।
রোববার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাব হুমায়ুন কবির বালু মিলনায়তনে রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে অপরাজিতাদের মতবিনিময় সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন খুলনা জেলা নারী উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি ফরজানা ফেরদৌস নিশা।
সভায় রাজনৈতিক দলের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ খুলনা জেলা সভাপতি শেখ হারুনুর রশিদ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল খুলনা জেলা কমিটির যুগ্ম আহবায়ক এনামুল হক সজল, জাতীয় পার্টির খুলনা জেলা সহ-সভাপতি ডা. সৈয়দ আবুল কাশেম, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি খুলনা জেলা কমিটির সাধারণ সম্পদক এস এম রশিদ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি খুলনা মহানগর কমিটির সভাপতি মফিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগ খুলনা জেলার সভাপতি সেলিনা আক্তার পিয়া, জাতীয়তাবাদী মহিলা দল খুলনা জেলার সভাপতি এড. তাসলিমা খাতুন ছন্দা।
নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা বিষয়ক ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন অপরাজিতা বুলু রায় গাঙ্গুলী, শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন অপরাজিতা প্রকল্পের প্রোগ্রাম সমন্বয়কারী সুবল ঘোষ। সার্বিক উপস্থাপন করেন অপরাজিতা আকলিমা খাতুন তুলি।
আলোচনা সভায় অংশ নেন ফারহানা আফরোজ মনা, চব্জলা মণ্ডল শামীমা সুলতানা শিলু, মাধুরী সরকার, অ্যাডভোকেট লুৎফর রহমান, পলি আক্তার, শাহিদা ইসলাম নয়ন, রেক্সনা আযম, মিনারা আজাদ, বিথীকা রায়, মারুফা, রিমা খানম প্রমুখ।
সভায় ইউনিয়ন পর্যায়ের অপরাজিতা, নারীনেত্রী, রাজনৈতিক নেতারা, নাগরিক নেতারা ও সাংবাদিকদের অংশ নেন।
সভায় বক্তারা বলেন, নারী উন্নয়ন নীতিমালা, আরপিও এবং দলের সংবিধানে নারী অন্তর্ভুক্তি বিষয়টি থাকলেও বাস্তবে সেটা পালন করা হচ্ছে না। সবার আশা প্রকাশ করেন যে রাজনৈতিক দলের সব কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারীদের সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল থেকে ৩৩ শতাংশ নারীকে নমিনেশন দেওয়া।
মতবিনিময় সভায় অপরাজিতা নেটওয়ার্ক সদস্যরা বলেন, বর্তমান আইন ও নীতিমালা অনুযায়ী নারীদের সামনে এগিয়ে নেওয়ার সরকারের যে পরিকল্পনা রয়েছে সেটা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। দলে সম্পৃক্ত না হওয়ার পেছনে কারণ হিসেবে নেতারা নারীদের যোগ্যতা, নারী না পাওয়া, শিক্ষা, সময় না দেওয়া ইত্যাদি কথা বলা হয়ে থাকে। কিন্তু বাস্তবতা হলো নারীরা যারা রাজনীতির সাথে যুক্ত হয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে এগুলো একেবারেই সঠিক নয়। নারীরা এখন রাজনীতিতে বেশি সময় দিচ্ছেন, আন্দোলনে সামনের সারিতে থাকছেন। সভায় আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩৩ শতাংশ নারীকে দলীয় নমিনেশন দেওয়ার দাবি জানানো হয়।
রাজনৈতিক দলের নেতাদের দলের কমিটিতে নারীদের সম্পৃক্ত করার অঙ্গীকার করে বলেন নারীদের আরো বেশি বেশি রাজনীতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ ও তৃণমূল পর্যায়ে নারীদের রাজনৈতিক দলের প্রাথমিক সদস্য হতে হবে। সময় এসছে কমিটিতে ৫০ শতাংশ নারী সম্পৃক্ত করার।
বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী সুইজারল্যান্ডের (এসডিসি) সরকারের সহায়তায় ও হেলভেটাস সুইস ইন্টারকোঅপরারেশনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ‘অপরাজিতা নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন’ প্রকল্পটি রূপান্তর খুলনা ও বাগেরহাট জেলার ৮৪টি ইউনিয়নে বাস্তবায়ন করছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০২৩
এমআরএম/এএটি