ঢাকা: হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রী ও দর্শনার্থীদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে জাবেদ গ্যাং এর লিডার মো. জাবেদকে (৪৭) গ্রেপ্তার করেছে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)।
মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) দিনগত রাতে তাকে এয়ারপোর্ট এলাকা থেকে আটক করা হয়।
সূত্র জানায়, গত ৩ জানুয়ারি সিঙ্গাপুরগামী যাত্রী মো. শফিকুল ইসলাম ফ্লাইট মিস করেছেন বলে তার আত্মীয়-স্বজনকে ফোন কল করে জানান জাবেদ। যাত্রীকে নতুন করে টিকিট করে দিতে হবে বলে আত্মীয়-স্বজনকে যাত্রীর কণ্ঠ নকল করে ফোন কলে কান্নাকাটি করেও শোনান জাবেদ। যাত্রীকে সিঙ্গাপুরে পাঠাতে হলে ৬৮ হাজার টাকা দিয়ে নতুন করে সরাসরি ফ্লাইটের টিকিট করতে হবে বলে যাত্রীর আত্মীয়-স্বজনকে বলেন জাবেদ। উপায়ন্তর না দেখে যাত্রীর আত্মীয়-স্বজনরা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ৬৫ হাজার ৫৫০ টাকা জাবেদকে পাঠান। অথচ যাত্রী শফিকুল তখন সিঙ্গাপুরগামী ফ্লাইটে ফ্লাই করছেন এর কারণে তার ফোন নম্বর তখন বন্ধ ছিল। আর ফোন বন্ধ থাকার কারণে যাত্রীর আত্মীয়-স্বজনও কোনো প্রকার সন্দেহ না করে যাত্রীর ফ্লাইটের জন্য জাবেদের কথামত এ টাকা পাঠান।
আরও জানা যায়, যাত্রীর আত্মীয়-স্বজন টাকা পাঠানোর পরপরই জাবেদ তার ফোন নম্বরটি বন্ধ করে দেন। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের কাছে অভিযোগ করলে তদন্ত করে প্রতারক জাবেদকে চিহ্নিত করা হয়। পরে বিমানবন্দর এলাকা থেকে জাবেদকে আটক করে এপিবিএন’র গোয়েন্দা দলের সদস্যরা। এর আগেও জাবেদকে বেশ কয়েকবার গ্রেপ্তার করে বিচারের সম্মুখীন করে এপিবিএন। বিমানবন্দরে কর্মরত ম্যাজিস্ট্রেট জাবেদকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মেয়াদে সাজাও দেন। তার বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। যেসব মামলায় জামিন পেয়ে তিনি বের হয়ে একই ধরনের প্রতারণার কাজে তিনি আবারও যুক্ত হন।
বুধবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক বাংলানিউজকে সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, জাবেদ দীর্ঘদিন ধরে বিমানবন্দর এলাকায় যাত্রীদের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা করে আসছিলেন। কখনো ডলার দেওয়ার কথা বলে যাত্রীর টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যাওয়া, সুকৌশলে যাত্রীর পাসপোর্ট এবং ট্রাভেল ডকুমেন্টস নিয়ে পালিয়ে যাওয়া, যাত্রী ফ্লাইটে যেতে পারবেন না বলে ভয়ভীতি দেখিয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে যাত্রীর আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে অর্থ আদায় করা এবং পুলিশ পরিচয়ে হুমকি দিয়ে অর্থ আদায়সহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত জাবেদ।
তিনি আরও জানান, এর আগেও বিভিন্ন অভিযোগে জাবেদকে অন্তত চার বার গ্রেপ্তার করে ব্যবস্থা নেয় এপিবিএন। কিন্তু বিভিন্ন মেয়াদে জেল খেটে ও জামিন পেয়ে বের হয়েই তিনি একই ধরনের প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত হন। নিজের নামে তিনি বিমানবন্দর কেন্দ্রিক একটি চক্রও গড়ে তুলেছেন জাবেদ। এ চক্রে তার পাঁচ থেকে ছয়জন সক্রিয় সদস্য রয়েছেন। তাদেরও বিরুদ্ধে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তার করে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২৩
এমকে/আরআইএস