ঢাকা: পার্বত্য অঞ্চলে সোলার প্যানেল বিদ্যুৎ বিতরণে অবৈধভাবে অর্থ প্রদানকারী ও অর্থ গ্রহণকারী উভয়কে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন পার্বত্যমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং।
মঙ্গলবার (১৬ মে) সচিবালয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং এর আওতাধীন সংস্থা কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন উন্নয়ন প্রকল্পসমূহের অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের কিছু এলাকায় সৌর বিদ্যুৎ প্যানেল সরবরাহের তালিকা প্রস্তুত করার সময় অবৈধ উপায়ে অর্থ বিনিময় হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। তিনি বলেন, যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পার্বত্য দুর্গম এলাকাবাসীর মধ্যে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য সোলার প্যানেল সিস্টেম বিতরণের নির্দেশ দিয়েছেন, সেখানে সোলার প্যানেল বিতরণে কোনো প্রকার দুর্নীতি বরদাশত করা হবে না।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী দুর্গম ও প্রত্যন্ত পর্বতবাসীর জন্য সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সোলার প্যানেল বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছেন। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখেই আগামী ৩০ জুনের মধ্যে ৪২ হাজার ৫০০ পরিবারের মধ্যে সোলার প্যানেল বিতরণ কাজ সম্পন্ন হবে।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশে আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশিত প্রকল্প কাজ অবশ্যই দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। তিনি যথাসময়ের মধ্যে প্রকল্প কাজের গুণগতমান অক্ষুণ্ণ রেখে দ্রুত কাজ সম্পন্ন করারও তাগিদ দেন। পার্বত্য অঞ্চলের বরাদ্দকৃত প্রকল্পের সার্বিক স্কিম ও উন্নয়ন কাজ যথাসময়ের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে করার জন্য পার্বত্য জেলা পরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্টদেরকে নির্দেশ দেন মন্ত্রী। তিনি বরাদ্দ করা অর্থের মধ্যেই গৃহীত স্কিমসমূহের কাজ সম্পন্ন করা এবং ব্যয় বৃদ্ধি বা বকেয়া থাকার প্রবণতা বন্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।
মন্ত্রী যত্রতত্র প্রকল্প না নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ভূমির জোনভিত্তিক পরিকল্পিত উপায়ে প্রকল্প কাজ নিতে হবে। যেখানে কৃষি জমি চাষ উপযোগী জমি রয়েছে সেখানে কৃষি চাষ, যেখানে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠার উপযোগী জায়গা রয়েছে সেখানে শিল্প প্রতিষ্ঠান, যেখানে হাট বাজার উপযোগী স্থান সেখানে হাট বাজার, যেখানে বাগান করার উপযোগী জায়গা সেখানে বাগান এবং যেখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার উপযোগী স্থান পাওয়া যাবে সেখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে।
সভায় জানানো হয়, মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পসমূহের বরাদ্দ ও ব্যয়ের মধ্যে অনুমোদিত প্রকল্পের সংখ্যা ১৬টি। যার এ অর্থবছরের মোট বরাদ্দের ৪১ দশমিক ৪১ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে।
এরআগে গত ২৯ মার্চ অনুষ্ঠিত সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহের বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা; ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে বাস্তবায়নাধীন এডিপিভুক্ত প্রকল্প, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন সহায়তা (কোড-২২১০০০৯০০), পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের জন্য উন্নয়ন সহায়তা (কোড-২২১০০১১০০) ও পার্বত্য চট্টগ্রাম স্থানীয় সরকার উন্নয়ন সহায়তা (কোড-২২১০০১০০০) এর আওতায় গৃহীত স্কিমসমূহের আর্থিক ও বাস্তব অগ্রগতি বিষয়ে সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোসাম্মৎ হামিদা বেগমের সভাপতিত্বে এ সময় অন্যান্যের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী, পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আলম চৌধুরী, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আমিনুল ইসলাম ও প্রদীপ কুমার মহোত্তম, যুগ্মসচিব (উন্নয়ন) মো. হুজুর আলী, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য বাস্তবায়ন মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ, সদস্য পরিকল্পনা মো. জসীম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২৩৪৮ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০২৩
এমআইএইচ/এসআইএ