ঢাকা: গুগলের তথ্যের ভিত্তিতে এক বাংলাদেশি শিশু যৌন নিপীড়ককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম মো. ইনজামামুল ইসলাম (২৬)।
তার বিরুদ্ধে একাধিক শিশুকে যৌন নিপীড়নের সত্যতা পাওয়া গেছে। গ্রেপ্তারের পর জব্দ হওয়া তার মোবাইল ফোনে শিশুদের নগ্ন ছবি, ভিডিও এবং চাইল্ড পর্নোগ্রাফির প্রচুর কন্টেন্ট পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার (১ জুন) সিআইডির মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ ও দিনাজপুরের ১০ বছরের কম বয়সী একাধিক শিশুকে যৌন নিপীড়ন করেন মো.ইনজামামুল ইসলাম। নিপীড়নের সেই দৃশ্যগুলো ভিডিও ধারণ করে রাখে নিজের মোবাইল ফোনে। পরে ইন্টারনেট সার্চ ইঞ্জিন গুগল ভিডিওগুলো শনাক্ত করে এ তথ্য পৌঁছে দেয় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল সেন্টার ফর মিসিং অ্যান্ড এক্সপ্লয়টেড চিলড্রেনের (এনসিএমইসি) কাছে।
এনসিএমইসি ঘটনাস্থল শনাক্ত করে এ তথ্য পাঠায় বাংলাদেশের পুলিশ সদর দপ্তরকে। এর ভিত্তিতে সিআইডিকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দেয় পুলিশ সদর দপ্তর।
পরবর্তীতে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) বিষয়টি পর্যবেক্ষণ এবং অনুসন্ধান করে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তরুণকে শনাক্ত করে। বুধবার (৩১ মে) সিপিসি’র সাইবার ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্টের একটি বিশেষ টিম গাজীপুরের জয়দেবপুর থানাধীন ভবানীপুরস্থ বানিয়ার চালা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইনজামুলকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে আজাদ রহমান জানান, যৌন নিপীড়নের শিকার শিশুগুলো ওই যুবকেরই নিকটাত্মীয়। গত ২০১৯ সালে সে তার এক আত্মীয়ের সঙ্গে প্রথম শারীরিক সম্পর্ক করে। প্রতিনিয়ত শারীরিক সম্পর্ক করাকালীন একদিন তার ওই আত্মীয়ের মেয়ে তাদের ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখে ফেলে। পরে তার ওই আত্মীয়ের মেয়েকেও (১০) ফুসলিয়ে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে এবং নগ্ন ভিডিও ধারণ করে।
একপর্যায়ে আত্মীয়ের মেয়েকে আরও প্রলোভন দেখিয়ে তার অন্য বান্ধবীকে এনে যৌন নিপীড়ন করার পাশাপাশি তাদের যৌন নিপীড়নের ছবি ও ভিডিও ধারণ করে এবং সেগুলো তার মোবাইল ফোনের স্টোরেজ ও গুগল ড্রাইভে সংরক্ষণ করে রাখে।
ইনজামামুলকে গ্রেপ্তারের সময় তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে তার অন্যান্য নিকট আত্মীয়সহ অনেকের নগ্ন ছবি, ভিডিও এবং চাইল্ড পর্নোগ্রাফির প্রচুর কন্টেন্ট পাওয়া যায়।
জিজ্ঞাসাবাদে সে শিশু যৌন নিপীড়নের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে। সে আরও জানায়, গ্রামের শিশু-কিশোরী এবং প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের সঙ্গে প্রথমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং পরবর্তীতে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে তাদের ভিডিও কনটেন্ট গুগল ড্রাইভে সংরক্ষণ করে রাখতেন ইনজামামুল ইসলাম।
তার বিরুদ্ধে ডিএমপির পল্টন থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২৩৪৫ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০২৩
পিএম/এসএএইচ