নীলফামারী: নীলফামারী শিল্প ও বাণিজ্য মেলা দর্শক টানতে পারছে না। মাসব্যাপী মেলার প্রায় ১৫ দিন অতিবাহিত হলেও সেভাবে জমে উঠেনি।
এবারের মেলাতে চুরি, দুল, তৈজসপত্র, শোপিস ইত্যাদি দোকানের আধিক্য বেশি। সেখানে সার্কাস, মোটরসাইকেল ও কার খেলা প্রদর্শন থাকলেও দর্শক উপস্থিতি একেবারে কম।
কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রচণ্ড তাবদাহের কারণে লোকজন বাড়ির বাইরে বের হচ্ছেন না। ফলে দর্শনার্থীদের উপস্থিতি কিছুটা কম।
নীলফামারী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাষ্ট্রির উদ্যোগে নীলফামারী বড় মাঠে এই শিল্প ও বাণিজ্য মেলাটি উদ্বোধন করা হয় গত ২২ মে। শুরু থেকেই এখানে মেলা করার বিরোধিতা করেন একটি মহল। মাঠের খোড়াখুড়ি, পরীক্ষার্থী ও শিক্ষার্থীর কথা বিবেচনা করে এই বিরোধিতা করা হয়। পরে অবশ্য এই শিল্প ও বাণিজ্য মেলাটি শুরু হয়। তবে জেলার অনেক উদ্যোক্তা, উৎপাদনে থাকা প্রতিষ্ঠান, বিদেশে পণ্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান এবার মেলায় অংশ নেয়নি। যেমন নীলফামারীর সানিটা সিরামিকস, সৈয়দপুরের রয়েল্য্যাক্স মেটাল ইন্ড্রাষ্ট্রিজ, ইকু গ্রুপের মতো প্রতিষ্ঠান এ মেলায় আসেনি।
উদ্যোক্তাদের দুইটি স্টল একটি সৈয়দপুর এন্টারপ্রাইজের বিভিন্ন ব্যাগ ও আরেকটি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠা এতে অংশ নিয়েছে।
মেলায় বেশি আধিক্য চুরি, দুল, ফিতা, ফুচকা দোকান, ককসমেটিক দোকানের। রয়েছে তৈজসপত্র, গৃহস্থালি জিনিসপত্র, ঢাকার নবাবী তান্দুরি চা, বিভিন্ন রকমের আইসক্রীম তৈরির দোকান ও ফুটপাথে যেসব পণ্য মেলে সেইসব দোকান। রয়েছে শিশুদের নানা ধরনের রাইডস। সেসব রাইডসে উঠলে ২০ থেকে ৬০ টাকা গুণতে হবে। শিল্প ও বাণিজ্য মেলায় ঠাঁই পেয়েছে বিভিন্ন চারার মেলাও।
নীলসাগর কনজ্যুমার প্রডাক্টস ৪০০ টাকার পণ্য কিনে মোটরসাইকেল, ফ্রিজ, ওভেন, এলইডি টিভি ইত্যাদি লোভনীয় পুরস্কারের ঘোষণা দিয়ে পণ্য বেচাকেনা করছে। মাথা নেড়ে নেচে গেয়ে চানাচুর বিক্রি করাও অনেকের নজর কাড়ছে মেলায়। আর এই প্রদর্শনীতে সবার নজর কাড়ছেন নারী বাইকার।
মেলায় দি গ্রেট রওশন সার্কাস বসানো হয়েছে। যদিও এই সার্কাসটি জেলার সৈয়দপুরের মালিকের। সার্কাসে সে ধরনের খেলা বিশেষ করে মানুষকে আকর্ষণ করার মতো কোনো আইটেম নেই এমনটাই অভিযোগ করেন জেলা শহরের বাবুপাড়ার সুমন। সার্কাসে লোকজন টানতে চিত্রনায়ক ও চিত্রনায়িকা আনার চিন্তাভাবনা করছেন সার্কাস কর্তৃপক্ষ। এমনটি জানালেন সার্কাসের একজন কর্মচারী।
মেলাতে আসা গৃহিণী রেহানা পারভীন বলেন, এই মেলায় পণ্যের দাম অনেক বেশি রাখা হচ্ছে। অথচ এসব বিষয়ে কর্তপক্ষের কোনো নজর নেই। মেলায় মেয়েদের সাজগোজের জিনিসই বেশি। এতে করে মেলা করার উদ্দেশ্য খুব একটা সফল হবে বলে মনে হয় না।
মেলায় ঘুরতে আসা সদরের দারোয়ানী এলাকার গৃহিনী বুলবুলি ও গাছবাড়ির আয়নাল হক জানান, মেলায় অস্থায়ীভাবে গড়ে তোলা প্রশ্রাব ও টয়লেট অনেকটা ব্যবহার অনুপযোগি। এদিকেও নজর নেই আয়োজকদের।
মেলা প্রসঙ্গে নীলফামারী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রি সভাপতি প্রকৌশলী এস এম সফিকুল আলম ডাবলু বলেন, জেলার প্রতিটি ব্যবসা-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান ও উদ্যোক্তাদের মেলায় অংশ নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছিল। বিদেশি একটি প্রতিষ্ঠানও মেলায় অংশ নিয়েছে। দর্শকরা মেলায় আসছেন চিত্তবিনোদনের জন্য। কিন্তু প্রচণ্ড গরমের কারণে মানুষের উপস্থিতি কিছুটা কম হলেও এখন মেলা জমে উঠবে। চিত্তবিনোদনের অভাব পূরণে এ মেলা ভূমিকা রাখবে বলে তিনি মনে করেন। তিনি জানান, মেলার সার্বিক ব্যবস্থাপনায় রয়েছে দিনাজপুরের মনতা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৪ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০২৩
এফআর