ঢাকা, মঙ্গলবার, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

শ্রমিক নিহত: নির্মাণাধীন ২০ তলা ভবনের অনুমোদন নিয়ে ধুম্রজাল

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৪ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০২৩
শ্রমিক নিহত: নির্মাণাধীন ২০ তলা ভবনের অনুমোদন নিয়ে ধুম্রজাল

ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহ নগরীর সাহেব আলী সড়কের ওপর নির্মাণাধীন প্রগতি টাওয়ারের ২০ তলা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনায় নানা রহস্য দানা বেঁধেছে। অভিযোগ উঠেছে- নির্মাণাধীন ওই ভবনটির ২০ তলার অনুমোদন নেই।

ফলে বিল্ডিং কোড না মেনে নির্মাণাধীন এই ভবনটি নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।  

এর আগে রোববার (১১ জুন) সকালে ওই ভবনের ছাদ থেকে পড়ে শিমুল মিয়া (৩৫) নামে এক নির্মাণ শ্রমিক নিহত হন। তিনি জামালপুর সদর উপজেলার মধ্য বটতলা গ্রামের মো. রফিকুল ইসলামের ছেলে।   

এ অবস্থায় ভবন মালিক সিন্ডিকেট ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে বলেও দাবি স্থানীয় সূত্রের।  

অভিযোগ বিষয়ে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের নগর পরিকল্পনাবিদ মানস বিশ্বাস বাংলানিউজকে বলেন, সিটি করপোরেশন ঘোষণার আগে ২০১৭ সালের মার্চ মাসের দিকে তৎকালীন পৌরসভা থেকে এই ভবনের অনুমোদন নিয়েছিল মালিকপক্ষ। তবে এ সংক্রান্ত নথি না দেখে আমি নিশ্চিতভাবে কিছু বলতে পারছি না।

এ সময় কোনো পৌরসভা ২০ তলা ভবনের অনুমোদন দিতে পারে কি-না বা নির্মাণাধীন এই ভবনে বিল্ডিং কোড মানা হয়েছে কি-না? জানতে চাইলে এই নগর পরিকল্পনাবিদ বাংলানিউজকে আরও বলেন, সড়কের ওপরে নির্মাণাধীন ভবনটিতে সঠিকভাবে বিল্ডিং কোড বা বিধিমালা মানা হয়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।      

জানতে চাইলে প্রগতি টাওয়ারের বর্তমান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মাহাবুবুর রহমান বাংলানিউজের কাছে নিজের মালিকানা পরিচয় এড়িয়ে যান।    

তিনি বলেন, দুই বছর আগে আমি এই জমিটি বিক্রি করে দিয়েছি। শুনেছি ক্রেতা পক্ষ পৌরসভা থেকে ২০ তলার অনুমোদন নিয়েছে। কিন্তু তারা কীভাবে এই অনুমোদন পেয়েছে, তা আমার জানা নেই।    

প্রশ্ন উঠেছে- দুই বছর আগে জমিটি ক্রয় করা হলে বর্তমান মালিকপক্ষ ২০১৭ সালে পৌরসভা থেকে অনুমোদন পেল কীভাবে?  

সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গেলে ভবনের নিরাপত্তা কর্মী মো. শহীদুল্লাহ জানান, ভূমি কর্মকর্তা (নায়েব), শিক্ষকসহ নানা শ্রেণী-পেশার মোট ১২ জন মালিক মিলে ৩৩ শতাংশ জমির ওপর এই ভবন নির্মাণ করছেন। তারাই এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারবেন।    

তবে বর্তমানে মালিক সিন্ডিকেট পক্ষ ফ্ল্যাট বিক্রি করার জন্য এই ভবনের মালিকানা ১৭০টি ভাগে বণ্টন করেছেন বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র।          

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ বলেন, নিহত শিমুল মিয়া নির্মাণাধীন ২০ তলা ভবনের ছাদে উঠে রডের কাজ করছিলেন। এ সময় হঠাৎ তিনি নিচে পড়ে গেলে ঘটনাস্থলেই মারা যান।

ওসি আরও বলেন, ভবন নীতিমালা বা বিল্ডিং কোড বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলতে পারবেন। এই বিষয়টি আমার নয়।  

তবে এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় এখনো অভিযোগ দায়ের হয়নি। শুনেছি মালিকপক্ষের সঙ্গে নিহতের পরিবারের আপস হয়ে গেছে। এ অবস্থায় নিহতের মরদেহ বিনা ময়নাতদন্তে নিতে পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে বিধায় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে নিহতের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে।  

** ময়মনসিংহে নির্মাণাধীন ২০তলা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে শ্রমিক নিহত

বাংলাদেশ সময়: ২০৫২ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০২৩

আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।