ঢাকা, বুধবার, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

যুদ্ধের ওপর দায় চাপিয়ে দায়িত্ব শেষ করা যাবে না: মেনন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৮ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২৩
যুদ্ধের ওপর দায় চাপিয়ে দায়িত্ব শেষ করা যাবে না: মেনন

ঢাকা: ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ওপর দায় চাপিয়ে নিজেদের দায়িত্ব শেষ করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।

বুধবার (১৪ জুন) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রাশেদ খান মেনন বলেন, এই বাজেটে বাংলাদেশের বর্তমান কার্যত অনুপস্থিত। বাজেটের ধারা বর্ণনায় অর্থমন্ত্রীর প্রধান বিষয় ছিল, গত দেড় দশকের অর্জন আর ভবিষ্যৎ দশকের সুখস্বপ্নের কথা। বাজেট শুনে-দেখে মনে হয় নাই এটা সংকটকালের বাজেট। সংকট এখন সর্বব্যাপী। মূল্যস্ফীতি, রিজার্ভ কমে যাওয়া, জ্বালানি সংকট, ডলার সংকট, নদীর পানির সংকট, সংকট কোথায় নেই! স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী এই সংসদে দাঁড়িয়ে যখন বলছেন যে, মূল্যস্ফীতি ও লোডশেডিংয়ে জনগণের জীবনে কষ্ট নেমে এসেছে; সেখানে অর্থমন্ত্রী ওই মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে ধরে রাখার আশাবাদ শোনালেও কীভাবে সেখানে নামিয়ে আনবেন, তার কোনো কৌশল বা নির্দেশনা বাজেটে দেননি। তিনি কেবল আশা প্রকাশ করেছেন।

তিনি বলেন, বাজার ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে চরম দুর্বলতার কারণে জিনিসপত্রের মূল্য একেবারেই লাগাম ছাড়া। পেয়াজের মূল্যের ঊর্ধগতি রোধের ক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপেই বোঝা যায় যে, বাজার নিয়ন্ত্রণে তারা আগ্রহী নন। অথবা কাউকে সুবিধা দিতে চান। দশদিন ধরে পেঁয়াজের মূল্য বাড়তে দিয়ে সিন্ডিকেটের হাতে বাজার ছেড়ে রেখে যখন পেঁয়াজ আমদানি করার সিদ্ধান্ত হলো ততদিনে ভোক্তা সাধারণ মানুষ কেবল নয়, কৃষকও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

রাশেদ খান মেনন আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শতভাগ বিদ্যুতায়নের যে গৌরব অর্জন করেছিলেন, সাম্প্রতিককালেই কেবল নয়, বেশ কিছুদিন ধরে দেশের অধিকাংশ স্থানকে অধিকাংশ সময় অন্ধকারে ডুবিয়ে রাখার মধ্য দিয়ে তাতে কালিমা লেপন করা হয়েছে। গ্রামাঞ্চলে মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ যায় না, মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ আসে, এটাই বাস্তবতা। প্রধানমন্ত্রী তার সাম্প্রতিককালের বক্তৃতায় এই সত্যকে স্বীকার করেছেন, তার জন্য দুঃখও প্রকাশ করেছেন। আমরা জানি জ্বালানি সংকটের কারণে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই ঘটনা ঘটেছে। এটা ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ওপর দায় চাপিয়ে নিজেদের দায়িত্ব শেষ করা যাবে না। স্পট মার্কেটে এলএনজির মূল্য বেড়ে যাওয়া, আমদানিকৃত কয়লার মূল্য পরিশোধ করতে না পারার কারণে যথাসময়ে জ্বালানি আনা সম্ভব হয়নি। আর এ ক্ষেত্রে এর মূলে রয়েছে ভ্রান্ত জ্বালানি আমদানি নীতি। এলএনজি লবির মুনাফার স্বার্থ দেখতে গিয়ে দেশের অভ্যন্তরে গ্যাস উৎপাদনে বিনিয়োগ না করা। বাপেক্সকে অকার্যকর রাখা। অথচ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে গ্যাসকূপ খুঁড়লেই গ্যাস পাওয়া যায়। ভোলায় দুটি কূপে বিপুল পরিমাণে গ্যাস প্রাপ্তি এর প্রমাণ। কিন্তু ওই গ্যাস জাতীয় গ্রিডে নিয়ে আসা এখনও সম্ভব হয়নি। সমুদ্র থেকে গ্যাস আহরণে আমরা কেবল অযথা সময়ক্ষেপণ করিনি, এই গ্যাস ব্লকগুলো বিদেশি কোম্পানিগুলোর কাছে তুলে দেওয়ার জন্য অপরিণামদর্শী পদক্ষেপ সমুদ্রের গ্যাসও আমাদের অধরা রয়ে গেছে। ভারত-মিয়ানমার সেখান থেকে গ্যাস উত্তোলন করলেও আমাদের আগ্রহ বা সিদ্ধান্তের অভাবে এই গ্যাস আমাদের হাত ছাড়া হয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৭ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২৩
এসকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।