ময়মনসিংহ: প্রায় সর্বত্রই হয়রানি ও ভোগান্তির অভিযোগ থাকলেও ময়মনসিংহ সদর উপজেলায় বিগত ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩১ হাজার ভূমি জমা-খারিজ ও নামজারি নিষ্পত্তির রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। যা পরিসংখ্যানের দিক থেকে সারা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ।
এতে ভূমি মালিকদের সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে বিগত সময়ের চেয়ে ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ে বেড়েছে সরকারের রাজস্ব।
রোববার (১৮ জুন) বিকেলে বাংলানিউজকে এতথ্য নিশ্চিত করেছেন সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) এইচ এম ইবনে মিজান।
এছাড়াও বিগত এক বছরে সদর উপজেলায় ১২শ ভূমি মোকাদ্দমা নিষ্পত্তি করা হয়েছে। আর এ সবই হয়েছে অনলাইন সেবা প্রদানের মাধ্যমে।
এতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন উপজেলার দড়ি ভাবখালি গ্রামের আবু তাহের, চরনিলুক্ষিয়া এলাকার আব্দুল বারেকসহ আরও অনেকেই। তারা জানান, অনলাইনে আবেদন করে হয়রানি ছাড়াই সহজে নামজারি পেয়েছি। এতে আমরা খুশি।
সংশ্লিষ্ট কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে বিভাগীয় নগরীর এই সদর উপজেলায় ভূমি উন্নয়ন কর আদায় হয়েছে ৫ কোটি ২৫ লাখ ৪৭ হাজার। এর আগের বছর এই আদায়ের পরিমাণ ছিল ৪ কোটি ৮৮ লাখ ৫৫ হাজার এবং ২০-২১ অর্থ বছরে ভূমি উন্নয়ন কর আদায় হয়েছে ৪ কোটি ১২ লাখ ২৮ হাজার টাকা।
এছাড়াও বিগত দুই অর্থ বছরে সদর উপজেলায় সরকারের ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের ভূমি ভ্রাম্যমাণ আদালত ও উচ্ছেদ অভিযানে প্রভাবশালী দখলমুক্ত করে সরকারি সম্পত্তি উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে দাপুনিয়া ও ভাবখালী বাজারের অবৈধ দখল, দড়ি কুষ্টিয়া জলমহাল, নগরীর উমেদ আলী পার্কের অবৈধ দখল এবং কাছারি ঘাটের অবৈধ দখল উচ্ছেদ উল্লেখযোগ্য।
সেই সঙ্গে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী এলাকাসমূহে বিগত সময়ে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে উত্তোলিত প্রায় ৫০ লাখ টাকা মূল্যের বালু জব্দ করা হয়। পরে ওই জব্দকৃত বালু নিলামে বিক্রি মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন অফিস সহকারী মো. ফখরুল হাসান।
এসিল্যান্ড ইবনে মিজান আরও জানান, বিগত দুই অর্থবছরে সিটি করপোরেশন ও সদর উপজেলায় ৩১০টি পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ৬ একরে অধিক খাস জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এই ভূমির বেশির ভাগই ছিল অবৈধ দখলে। যা জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় উচ্ছেদ করা হয়।
এ ঘটনায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মোস্তাফিজার রহমান।
তিনি বলেন, এক বছরে ৩১ হাজার নামজারি নিষ্পত্তি অনেক বড় অর্জন। এতে সেবাপ্রার্থীদের হয়রানি কমেছে। আশা করছি অন্যরাও এই পদক্ষেপটি অনুসরণ করে ভূমি জমা-খারিজ ও নামজারি নিষ্পত্তিতে জনবান্ধব হয়ে কাজ করবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০২৩
আরএ