পাথরঘাটা (বরগুনা): কেউ ট্রলারে জাল উঠাতে ব্যস্ত, কেউ জাল উঠিয়ে ট্রলার ধোয়া-মোছার কাজ করছেন, আবার অনেকে ট্রলারে চুনকামও করেছেন।
মধ্যরাতে সমুদ্রে ট্রলার নিয়ে মাছ শিকারে যাবেন উপকূলের জেলেরা।
রোববার (২৩ জুলাই) মধ্যরাতে শেষ হচ্ছে সমুদ্রে মাছ ধরার ওপর সরকারের দেওয়া টানা ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা। তাই রাত থেকেই সাগরে ছুটবেন জেলেরা। ধরা পড়বে ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালি ইলিশ। তাই জেলে পাড়াগুলোতে শেষ মুহূর্তের জোর প্রস্তুতি চলছে।
৬৫ দিন পর সাগরে যেতে কেউ ট্রলারে ওঠাচ্ছেন জাল, কেউ বরফ তুলছেন। আবার কেউ ট্রলার মেরামতের বাকি কাজ সেরে নিচ্ছেন। জেলেরা বলছেন, বেকার সময় ঋণগ্রস্ত হয়েছেন বহু জেলে। খাদ্য সহায়তা হিসেবে চাল পেলেও, তা দিয়ে সংসার চলে না। সাগরে ইলিশ ধরা পড়লে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার স্বপ্ন দেখছেন জেলেরা।
চরলাঠিমারা গ্রামের জেলে মো. আব্বাস মিয়া বলেন, ৬৫ দিনের অবরোধ শেষ অইবে রোববার। রাতেই সাগরে যামু। ট্রলার মালিকের কাছ থেইকা দাদনের (অগ্রীম) টাকা আনছি। যে কয়দিন সাগরে থাকমু ১২ থেকে ১৫ দিনের বাজার সদায় দিয়া যামু। ট্রলার ও জাল মেরামতের কাজ শ্যাষ অইছে।
ট্রলার মালিক সেলিম চৌধুরী বলেন, আমরা ট্রলার জাল মেরামতের কাজ শেষ করছি। এখন সাগরে যাওয়ার অপেক্ষা সরকারি নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হলেই বরফ নিয়ে সাগরে ট্রলার পাঠাবো।
পাথরঘাটা বিএফডিসি আড়তদার মো. মারুফ বলেন, নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে যাওয়ার জন্য ৫টি ট্রলারে ৩৩ লাখ টাকা দাদন দিয়েছি। আমি আশাবাদী এবার ভালো মাছ ধরা পড়বে।
তিনি আরও বলেন, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা প্রকৃত অর্থে আমাদের জন্য নয়। এটি আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ নিষেধাজ্ঞার সময় ভারত বাংলাদেশি জলসীমায় এসে মাছ শিকার করে নিয়ে যায়। ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা ও ভারতে জেলেরা মাছ নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি সরকারের গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, রোববার রাত ১২টার পর থেকেই জেলেরা সাগরে যাওয়া শুরু করবে। ইতোমধ্যেই সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, বরাবরের মতো এখনো বলছি ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা আমাদের জন্য নয়, এটা আমাদের জন্য অভিশাপ।
এর আগে, মাছের প্রজনন ও বেড়ে ওঠা নিশ্চিত করাসহ জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সাগরে সব ধরনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০২৩
আরএ