ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধনে সাংবাদিকরা খুশি হবেন: মন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩০ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০২৩
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধনে সাংবাদিকরা খুশি হবেন: মন্ত্রী

ঢাকা: ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের সংশোধনে সাংবাদিকদের সবাই খুশি হবেন বলে মনে করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামী সেপ্টেম্বরেই এ আইনের সংশোধনী জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হবে এবং তা পাস করা হবে।

 

মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) বিকেলে সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ইমন গিলমোরের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মন্ত্রী।  

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও বাংলাদেশের মধ্যকার যে সম্পর্ক আছে, সেটা তার (ইমন গিলমোর)  সফরে আরও জোরদার হলো। নতুন আঙ্গিকে আমাদের এই সম্পর্ক কাজ করবে।  

প্রতিনিধির সঙ্গে কী কথা হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার সঙ্গে আমাদের ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমি তাকে বলেছি, আমরা এ আইন সংশোধন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামী সেপ্টেম্বরেই এ সংশোধনী জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হবে এবং তা পাস করা হবে বলে আশা করছি।  

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কী ধরনের সংশোধন আনা হচ্ছে- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, এর জন্য আপনারদের একটু অপেক্ষা করতে হবে। আমি মনে করি আপনাদের পরামর্শ সরকারের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমি এটুকু বলতে পারি, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের যে সংশোধন হচ্ছে, তাতে আপনারা সবাই খুশি হবেন।

তিনি বলেন, আমরা তথ্য সুরক্ষা আইন নিয়ে কথা বলেছি। ডেটা প্রটেকশন অ্যাক্ট নিয়ে অংশীজনদের সঙ্গে একবার আলোচনা করার পর একটি ড্রাফট করা হয়েছে। এ ড্রাফট নিয়ে আবারও অংশীজনের সঙ্গে বসা হবে বলে জানিয়েছেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী।  

আইনমন্ত্রী বলেন, তার (ইমন গিলমোর) সঙ্গে আমার শ্রম আইন নিয়ে আলাপ হয়েছে। এ বিষয়ে আমি বলেছি, শ্রমিক ও শ্রম আইন নিয়ে বাংলাদেশে অনেক কাজ হয়েছে এবং বর্তমানেও করছি, আগামীতেও করা হবে। যেটুকু সমস্যা আছে, তা আইএলওর আগামী গভর্নিং বডির মিটিং এ সমাধান হবে বলে আশ্বাস দিয়েছি। এ বিষয়ে আমি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগিতা চেয়েছি।  

নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে বিশেষ কোন আলাপ হয়নি। নির্বাচন কমিশনার ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ব্যাপারে আমরা যে আইনটি করেছি সেটির বিষয়ে আমি তাকে বলেছি। গত পঞ্চাশ বছরে উপমহাদেশে এ ধরনের আইন করা হয়নি বলেও জানিয়েছি। একইসঙ্গে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে এ আইনটি প্রয়োজন বলে জানিয়েছি। এই নির্বাচন কমিশন এই আইনের আলোকেই নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছে বলেও আমি উল্লেখ করেছি৷ আপনারা তার কথা শুনেছেন৷ এটা শোনার পর তিনি বলেছেন, ইটস অ্যা ভেরি বিগ স্টেপ।  

গত দুই তিন সপ্তাহ ধরে অনেক পর্যবেক্ষক বিদেশি সংস্থার প্রতিনিধিরা এসেছেন, সবার সঙ্গে বৈঠক করেছেন, এতে সরকার কোনো চাপ অনুভব করছে কি না, বিষয়টিকে সরকারের মন্ত্রী হিসেবে কীভাবে দেখছেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, পৃথিবী একটি গ্লোবাল ভিলেজ। এখানে পরস্পর-পরস্পরের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখার জন্য অনেক আলাপ-আলোচনা হয়। আমি সে আলোকেই দেখছি। আমরা একটা স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ। কিন্তু আমাদের যে বন্ধুরা আছে, তারা আমাদের অবশ্যই অনেক কিছু জিজ্ঞেস করতে পারে। আবার অনেক কথা তাদেরও জিজ্ঞেস করতে পারি। কখনো কোথাও যদি ভুল বোঝাবুঝি হয়ে থাকে, সেগুলো দূর করার জন্য এই আলোচনা। সেগুলো অনেক ক্ষেত্রেই দূর হচ্ছে বলে মনে করি।  

ইউরোপীয় ইউনিয়নের মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ইমন গিলমোর বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে আমাদের কথা হয়েছে। এই আইনের প্রয়োগ নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন উদ্বিগ্ন। বিপুলসংখ্যক সাংবাদিক ও সামাজিকমাধ্যম ব্যবহারকারীর বিরুদ্ধে এ আইনে মামলা হয়েছে। আইনমন্ত্রী আমাকে নিশ্চিত করেছেন, এ আইনটি সংশোধনে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। আমরা আইনটি প্রকাশের অপেক্ষায় আছি। প্রকাশ হওয়ার পর আমরা আইনটি বিস্তারিতভাবে পরখ করে দেখব।

তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সংশোধনকে আমরা সবার আগে স্বাগত জানাতে চাই। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও বাংলাদেশের সম্পর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে মানবাধিকার। অর্থনৈতিক প্রসঙ্গও পরিবর্তন হচ্ছে। কারণ পণ্য উৎপাদনে কোনো মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে কি না, তা জানতে ভোক্তা ও বিনিয়োগকারীরা আগ্রহী।

শ্রম আইন প্রসঙ্গে ইমন গিলমোর বলেন, আমরা শ্রমিক সংগঠন নিয়ে কথা বলেছি। মন্ত্রী আমাকে বলেছেন যে, শ্রমিক সংগঠন গড়ার ক্ষেত্রে বাধাগুলো কমিয়ে আনা হয়েছে।

পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই প্রতিনিধি বলেন, আমরা আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রাক-নির্বাচনী অনুসন্ধানী দল দুই সপ্তাহের বেশি এখানে ছিল। তারা প্রতিবেদন তৈরি করছে। এখন হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ জোসেপ বোরেল সিদ্ধান্ত নেবেন, বাংলাদেশে পর্যবেক্ষক পাঠাবেন কি না। এ নিয়ে কোনো আগাম মন্তব্য করতে চাই না।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০২৩
জিসিজি/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।