ঢাকা: ইয়েমেনে ১৮ মাস অপহৃত থাকার পর জাতিসংঘের কর্মকর্তা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল সুফিউল আনাম দেশে ফিরেছেন। দেশে ফিরে বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে সেখানকার অভিজ্ঞতা শোনান তিনি।
বুধবার (৯ আগস্ট) এমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে বিকেল ৫টা ২০ মিনিটের দিকে তিনি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসেন তিনি।
অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল সুফিউল আনাম ইয়েমেনের রাজধানী এডেনে জাতিসংঘের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা বিভাগের ফিল্ড সিকিউরিটি কো-অর্ডিনেশন অফিসার (প্রধান) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
২০২২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি দেশটিতে কাজ করার সময় তিনি অপহরণের শিকার হন। সেদিন জাতিসংঘের একটি ফিল্ড মিশন শেষে এডেনে ফিরছিলেন সুফিউল আনামসহ জাতিসংঘের আরও চার কর্মকর্তা।
সে সময় ইয়েমেনের মুদিয়াহ প্রদেশ থেকে জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার সদস্যরা তাকে অপহরণ করেন। সুফিউল আনামের মুক্তিপণ হিসেবে ৩০ লাখ ডলার দাবি করেন জঙ্গিগোষ্ঠীর সদস্যরা।
সুফিউল আনামের খোঁজে ইয়েমেনে যায় বাংলাদেশের পাঁচ সদস্যের একটি গোয়েন্দা প্রতিনিধিদল। মঙ্গলবার তাকে উদ্ধার করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে নেওয়া হয়। সেখান থেকে আজ দেশে ফিরলেন তিনি।
বিমানবন্দরে সুফিউল আনাম সাংবাদিকদের বলেন, এক বছর ছয় মাস আগে পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে ফেরার সময় আমাকে অপহরণ করা হয়। ইয়েমেনে আমার চার সহযোগী ছিলেন। অবর্ণনীয় দিন কেটেছে। প্রতিটি ক্ষণে ছিল মৃত্যুর ভয়। ভাষায় বর্ণনা করা যাবে না, তা কেবল সিনেমায় দেখা যায়।
ইয়েমেনে অপহরণের ভয়ংকর অভিজ্ঞতা জানিয়ে সুফিউল বলেন, সারাক্ষণ আমার চোখ বাঁধা ছিল। সন্ত্রাসীরা ১৮ বার আমার স্থান পরিবর্তন করে। এই সময় তারা আমাকে দশটি জায়গায় রেখেছিল। তবে ভাগ্য ভালো ছিল তারা নির্যাতন করেনি। সন্ত্রাসীরা আমাকে পাহাড়ে ও মরুভূমিতেও রেখেছিল।
কেন তাদের অপহরণের লক্ষ্যবস্তু বানানো হল, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, জাতিসংঘে কাজ করি বলে টার্গেট করেছিল বলে মনে হয়। তারা ভিডিও করেছিল তাদের দাবিদাওয়া নিয়ে। নিরাপত্তার স্বার্থে কিছু বলতে চাইছি না। মুক্তি পাওয়ার পর গতকালই প্রথম পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে।
উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান সুফিউল আনাম। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) কর্মকর্তাদের প্রতি। তিনি বলেন, তাদের এই দায়িত্ব পালন ভুলব না।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৪ ঘণ্টা, আগস্ট ৯, ২০২৩
এমকে/আরএইচ