ঝালকাঠি: উদ্বোধনের আগেই ধসে পড়েছে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার সরমহল গ্রামের সিংহবাড়ির খালে ওপর নির্মিত সেতুর সংযোগ (অ্যাপ্রোচ) সড়ক। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার বিভাগ (এলজিইডি)।
জানা গেছে, কাজের শুরু থেকেই সংযোগ সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ করে আসছিলেন স্থানীয়রা। কিন্তু বিষয়টি কানে তোলেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
এবার ধসের জন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগকে দায়ী করেছেন তারা।
উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু ও দুই পাশে ১০৪ মিটার সংযোগ সড়কের কাজের জন্য খরচ হয়েছে ৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে কুশঙ্গল ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম সংযুক্ত হবে।
সরেজমিন দেখা যায়, সেতুর দুই পাশের সংযোগের তিন দিকের সড়ক বৃষ্টিতে ভেঙে গেছে। এ ছাড়া সেতুর গোড়ায় বাঁধাই করা ব্লক সরে গেছে, সড়ক ফুটো হয়েছে। সেতুর পূর্ব ও পশ্চিম দিকের সংযোগের বালু সরে গিয়ে কয়েকটি স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। ব্লকও ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। ঠিকাদারের লোকজন ফাটল ও ধসে পড়া অংশ পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কাজ শুরুর দিকে ধীরগতি ছিল। কিন্তু যথাসময়ের মধ্যে কাজটি শেষ করার জন্য শেষের দিকে এসে তড়িঘড়ি করে কাজ সম্পন্ন করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এলজিইডির সঠিক তত্ত্বাবধান না থাকায় ও নিম্নমানের কাজ হওয়ায় বৃষ্টিতে ভেঙে গেছে সেতুতে ওঠার সড়কটি।
সরমহল গ্রামের বাসিন্দা কালাম সরদার, রুহুল আমীন হাওলাদার ও তুহিন সরদার বলেন, সড়ক ও সেতুটির নির্মাণ শুরু হওয়ার পর এলাকায় মানুষ আশায় বুক বেঁধেছিলেন। তবে নিম্নমানের কাজ দেখে হতাশা দেখা দেয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দরপত্রের মাধ্যমে মেসার্স এম এম এন্টারপ্রাইজ নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্সে কাজটি পান জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আল-আমীন। পরবর্তী সময়ে তিনি বিক্রি করেন মো. নান্নু, মনির হোসেন, রিয়াজ ও কামাল হোসেন নামে চার ব্যক্তির কাছে। কাজের নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে গেলে চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত এক বছর সময় বাড়ানো হয়।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের একজন মনির হোসেন বলেন, রড, সিমেন্ট, পাথরসহ নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ভারী বর্ষণে সংযোগ সড়কের যে ক্ষতি হয়েছে, তা সংস্কার করা হবে।
কুশঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন সিকদার বলেন, আগ্রাধিকার ভিক্তিতে নির্মাণাধীন এই সেতুটি আগামী সেপ্টেম্বর মাসে উদ্বোধনের কথা ছিল। এমন সময় সেতুর সংযোগ সড়ক ধসে পড়ার খবর পেয়ে আমি এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি ঘটনাস্থলে এসে দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী ইকবাল কবীর বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক ঠিকাদার দ্রুত সংস্কার করে দেবে। নিয়ম অনুযায়ী কাজ না করলে বিল পাবে না।
বাংলাদেশ সময়: ০৯০০ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০২৩
এসএএইচ