ঢাকা: রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবস্থিত ঢাকা কাস্টম হাউসের গুদাম থেকে ৫৫ কেজি ৫০১ গ্রাম সোনা খোয়া গেছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৫০ কোটি টাকার বেশি।
কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, সাধারণত বিমানবন্দরে যাত্রীদের কাছ থেকে জব্দ করা সোনার বার, অলংকারসহ মূল্যবান জিনিস এই গুদামে রাখা হয়। গুদামে রক্ষিত সোনার হিসাব মেলাতে গিয়েই ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে। কীভাবে এই বিপুল পরিমাণ সোনা উধাও হলো, সে বিষয়ে মুখ খুলছেন না কাস্টম হাউসের কোনো কর্মকর্তা। ইতোমধ্যে এ ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে।
কাস্টমস সূত্রে আরও জানা গেছে, স্বর্ণের গুদাম যেখানে, সেই জায়গাটি সম্পূর্ণ সংরক্ষিত এলাকা। এছাড়া পুরো এলাকাটি সিসি ক্যামেরার নজরদারিতে। বিমানবন্দরের ভেতরে ‘লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড’ অর্থাৎ হারিয়ে যাওয়া ও খুঁজে পাওয়া পণ্য রাখার স্থানের পাশেই কাস্টম হাউসের গুদামটির অবস্থান। কাস্টম হাউসের গুদামটিতে বিমানবন্দরে কর্তব্যরত ঢাকা কাস্টম হাউস, শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরসহ অন্যান্য সংস্থাগুলোর জব্দকৃত মালামালগুলো এখানে রাখা হয়।
জানা গেছে, সোনার অলংকার ও সোনার বার মিলিয়ে প্রায় ৫৫ কেজি সোনা কাস্টমের গুদামের একটি আলমারিতে বাক্সের মধ্যে সংরক্ষিত ছিল। সেই বাক্সটিই চুরি হয়ে গেছে। গুদামের আলমারি ভেঙে চুরি করা হয়েছে বাক্সটি। কীভাবে এই সোনা গায়েব হয়েছে, তা জানতেই এখন বিমানবন্দরে বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, বিমানবন্দরে ২৪ ঘণ্টায় পালাক্রমে চারটি শিফট কাজ করে। এই শিফটগুলোতে জব্দ হওয়া সোনা এক গুদামেই রাখা হতো এতদিন। তবে স্বচ্ছতার স্বার্থে ঢাকা কাস্টম হাউসের কমিশনার এ কে এম নুরুল হুদা আজাদ শিফট ভিত্তিক জব্দ হওয়া সোনা আলাদা আলাদা লকারে রাখার নির্দেশনা দেন। তিনি নির্দেশ দেন, যে শিফট জব্দ করবে তাদের জব্দ করা সোনা তাদের লকারে থাকবে।
প্রায় সপ্তাহ খানেক আগে কমিশনার এ কে এম নুরুল হুদা আজাদ খবর পান প্রায় ৫৫ কেজি সোনা গুদামে নেই। এরপর একটি কমিটি করে দেওয়া হয় গুদামের সব সোনা গণনা করার জন্য। প্রাথমিকভাবে এ ঘটনার সত্যতা মেলে।
তবে রোববার ঢাকা কাস্টম হাউসের কমিশনার একটি গণমাধ্যমকে বলেছেন, এ বিষয়ে কাস্টমস কর্মকর্তারা তদন্ত করছেন, তদন্তের পর মামলা করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে ঢাকা কাস্টম হাউজের সহকারী কমিশনার পদের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলার চেষ্টা করে বাংলানিউজ। তবে, তাদের কেউই এ বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি।
বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজিজুল হক বাংলানিউজকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তবে, খোয়া যাওয়া সোনার পরিমাণ কত সেটি এখনই জানাতে পারেননি তিনি। ওসি বলেন, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে একটি দল কাস্টম হাউসে গিয়েছে। ঘটনা সত্য। তবে, এখনো দালিলিক অভিযোগপত্র হাতে আসেনি। তাই কী পরিমাণ সোনা খোয়া গেছে, সেটি বলা সম্ভব নয়। অভিযোগপত্র হাতে এলে বিস্তারিত জানানো যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০২৩
এমকে/এমজেএফ