ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

মাদারীপুরে ফসলি জমি-রাস্তা নষ্ট করে খাল খনন করায় মানববন্ধন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০২৩
মাদারীপুরে ফসলি জমি-রাস্তা নষ্ট করে খাল খনন করায় মানববন্ধন মানববন্ধন

মাদারীপুর: মাদারীপুরে ফসলি জমি ও রাস্তা নষ্ট করে খাল খনন করায় মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।  কৃষক, মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষকসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ এ মানববন্ধনে অংশ নেন।

রোববার (১ অক্টোবর) দুপুরে সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের বড় বাহাদুরপুর এলাকায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় বক্তারা জানান, সর্বশেষ বিআরএস জরিপে সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের ৫৭ নম্বর বড় বাহাদুরপুর মৌজায় ১৪৪৪ নম্বর দাগে হালট হিসেবে লিপিবদ্ধ। বড় বাহাদুরপুর থেকে এলাকা চৌহদ্দি পর্যন্ত এক কিলোমিটারের মধ্যে ইটের রাস্তাও রয়েছে। এছাড়া অত্র এলাকায় বহু ঘরবাড়ি ও গাছপালা থাকার পর বিএডিসি অফিসের পক্ষ থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার খাল খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কায় বিষয়টি বুঝতে পেরে প্রতিবাদ করেন স্থানীয়রা।

স্থায়ীভাবে খাল খনন বন্ধের দাবি জানান তারা। খাল খনন প্রকল্প বাদ দিয়ে ইটের রাস্তার পরিবর্তে পাকা রাস্তা নির্মাণের দাবি জানান এলাকাবাসী। তা না হলে আগামীতে বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা দেন তারা। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের কাছে একটি লিখিত দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

জানা গেছে, বিআরডিবি মাদারীপুর সদর উপজেলার অফিসের পক্ষ থেকে ১৩০০ মিটার খাল খনন উদ্যোগ নেওয়া হয়। কাজটি পায় মাদারীপুরের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সার্বিক ইন্টারন্যাশনাল। গত সপ্তাহে কাজটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানে বুঝিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ। পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার কথা রয়েছে। এতে খরচ ধরা হয় ১৫ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এখানে খাল খনন করা হলে কৃষকের জমি নষ্ট হবে। বড় বড় ভবন থেকে শুরু করে বসতঘর ভেঙে যাবে। এতে কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হবে এলাকাবাসীর। আমরা খাল চাই না। এই খাল খনন যদি বন্ধ করা না হয়, তাহলে বৃহত্তর আন্দোলন করা হবে। কৃষকের ফসলি জমি কোনো অবস্থাতেই ক্ষতিগ্রস্ত হতে দেওয়া যাবে। প্রয়োজনে আমরা উচ্চ আদালতের যাবে।

কমলেশ ভক্ত নামে এক ব্যক্তি বলেন, কৃষি ফসল আনতে একটা রাস্তা প্রয়োজন, অথচ সেটা না করে ইটের রাস্তা ভেঙে খাল খনন করা হচ্ছে। এটা কোনো অবস্থায় মেনে নেওয়া যাবে না। পাকা রাস্তা হলে জনগণ উপকৃত হবে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা বিশ্বেশর বাড়ৈ বলেন, আমার বয়স ৭৫ বছর। কখনই দেখি নাই এখানে খাল ছিল। আমিও এখানে গরু নিয়ে যাতায়াত করেছি ছোট সময়। দক্ষিণপাশের মাঠে হাজার হাজার মণ ধান হয়, ফসলি জমি নষ্ট করে খাল খনন করা হলে কৃষকরা অভাবী হয়ে পড়বে। তাই আমরা খাল খনন চাই না। একটি হালট ছিল এখানে। যা সরকারি খাতায় লিপিবদ্ধ। একটি মহল শত শত পরিবারকে সর্বশান্ত করার পাঁয়তারা করছে। ইটের রাস্তা নষ্ট করে খাল খনন এটা কোনো কিছুতেই হতে দেওয়া যাবে না।

এ ব্যাপারে বিএডিসির মাদারীপুর সদর উপজেলার ইঞ্জিনিয়ার রাজীব হোসেন বলেন, ৫০-৬০ বছর আগে এখানে খাল ছিল। যা পলি পড়ে ভরাট হয়ে যায়। অথচ এখন এলাকাবাসী খাল খনন চান না, তাই আপাতত কাজ বন্ধ রয়েছে। তাদের সঙ্গে সমঝোতা করেই পুনরায় খাল খননের কার্যক্রম শুরু করা হবে।

মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান বলেন, খাল খনন বন্ধের জন্য একটি আবেদন করেছেন এলাকাবাসী। সবকিছু খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০২৩

আরএ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।