ফরিদপুর: ফরিদপুরের ইউনুছ আলী হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরের দিকে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শাহজাহান।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. আবুল কালাম (৩০) ও মো. জিয়া (২৩), মো. জাহাঙ্গীর আলম (২৮) ও আব্দুর রহমান (২৬)। গতকাল মঙ্গলবার রাতে পাবনার সাথিয়া উপজেলায় অভিযান চালিয়ে কালাম ও জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মানিকগঞ্জের সিংগাইর এলাকা থেকে আলম ও আব্দুর গ্রেপ্তার হয়।
সংবাদ সম্মেলনে এসপি মো. শাহজাহান জানান, গত ৮ অক্টোবর ফরিদপুর সদর উপজেলার নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের কবিরপুর চরের ঝোপের মধ্য থেকে ইউনুছ আলী (৬০) নামে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওইদিন ঘটনাস্থলে পাওয়া একটি মোবাইলফোনের সূত্র ধরে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে আসামিকে শনাক্ত করা হয়।
তিনি আরও জানান, নিহত ইউনুছ মেহেরপুর সদর উপজেলার নতুন দরবেশপুর গ্রামের বাসিন্দা। ইউনুছ আলী নিজ এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোভ্যান চালাতেন। সেই ভ্যানের ব্যাটারি নষ্ট হয়ে যায়। পরে নতুন ব্যাটারি কিনতে গেলে দেখেন ২৬ হাজার টাকা দাম। পরে তার মেয়ে এনজিও থেকে ২০ হাজার টাকা লোন নেন বাবাকে (ইউনুছ) দেন। বাকি বাকি ৬ হাজার টাকা সংগ্রহের জন্য ইউনুছ আলী ফরিদপুরে এসে দিনমজুরের কাজ খোঁজেন এবং অবস্থান করেন। গত ০৭ অক্টোবর নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় চায়ের দোকানে বসে কাছে থাকা ২০ হাজার টাকা গুনছিলেন ইউনুছ আলী। এটা দেখে জাহাঙ্গীর বিষয়টি তার পাশে থাকা আব্দুরকে জানান। তারা দু’জন পরামর্শ করে কালাম ও জিয়াকে জানান। এরপর তারা চারজন এক হয়ে ইউনুছ আলীকে হত্যা করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী কালাম জমির মালিক সাজেন এবং বাকিরা কৃষাণ সাজেন। তখন তিনজন পরিকল্পিতভাবে ইউনুছকে কৃষাণ হিসেবে তাদের সঙ্গে কাজ করার কথা বলে নিয়ে যান। পরে ইউনুছের কাছে থাকা ২০ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে তাকে হত্যা করেন ওই চারজন। রাতে চরাঞ্চলে আত্মগোপনে থাকেন এবং পরদিন সকালে শহরের একটি আবাসিক হোটেলে ওঠেন তারা। প্রত্যেকে সাড়ে চার হাজার টাকা করে ভাগ করে নিয়ে ফরিদপুর ত্যাগ করে নিজ নিজ এলাকায় চলে যান। পরে মোবাইলফোনের সূত্র ধরে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে আসামিদের শনাক্ত করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার রাতে পাবনার সাথিয়া উপজেলায় অভিযান চালিয়ে কালাম ও জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মানিকগঞ্জের সিংগাইর এলাকা থেকে আলম ও আব্দুর গ্রেপ্তার হয়। গ্রেপ্তারদের বুধবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ ইমদাদ হুসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) শৈলেন চাকমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) শেখ মো. আবদুল্লাহ বিন কালাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সালাউদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) তালাত মাহমুদ শাহানশাহ, কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিলসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২৩
এসআরএস