কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ায় ভেঙে ফেলা হয়েছে ২০২০ সালে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে নির্মিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সদর উদ্দিন খানের নির্দেশে সোমবার (২০ নভেম্বর) ম্যুরালটি ভেঙে ফেলা হয়।
অভিযোগ উঠেছে কয়েকটি দোকানঘর উন্মুক্ত করতেই জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে অবস্থিত ম্যুরাল ভেঙে ফেলা হয়েছে এই আওয়ামী লীগ নেতার নির্দেশে। এতে নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এই নেতার এমন কর্মকাণ্ডে জেলাজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। চলছে আলোচনা-সমালোচনাও।
জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে ২০২০ সালে একযোগে সারাদেশের জেলা পরিষদ চত্বরে নির্মাণ করা হয় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল। এরই ধারাবাহিকতায় কুষ্টিয়া জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণেও নির্মাণ করা হয় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল। হঠাৎ গত দুইদিন ধরে তাঁবু দিয়ে ঢেকে গোপনে ভেঙে ফেলা হয়েছে ম্যুরালটি।
খোঁজ নিয়ে ও মুর্যাল ভাঙার কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে নকশা বহির্ভূত কয়েকটি দোকানঘর উন্মুক্ত করতেই জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সদর উদ্দিন খানের নির্দেশে ভেঙে ফেলা হচ্ছে এই ম্যুরালটি। এর বাইরে আর কোনো কথা বলতে রাজি হননি তারা।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া শহর আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আশরাফুল আলম বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙার খবর শুনেই জেলাজুড়ে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে। তবে এই ম্যুরাল ভাঙার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক না কেনো তাদের আইনের আওতায় আনা হোক। কঠোর বিচার দাবি করছি।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সোহেল রানা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান আমাদের দেশ স্বাধীন করেছেন। তার ম্যুরাল ভাঙার ঘটনা বড় অন্যায় ও খুবই দুঃখজনক।
এ ব্যাপারে কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি হাজী রবিউল ইসলাম বলেন, সামান্য টাকার লোভে হীন স্বার্থ চরিতার্থ করতে বর্তমান চেয়ারম্যান সদর উদ্দিন খান বঙ্গবন্ধুর দৃষ্টিনন্দন ম্যুরাল ভেঙে চরম অপরাধ করেছেন। ধৃষ্টতাপূর্ণ এই অপরাধের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপসহ বিচার প্রার্থনা করছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সদর উদ্দিন খানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নুল আবেদিন এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ বিষয়ে তিনি সম্পূর্ণ অবগত নন। তবে সৌন্দর্য বর্ধনে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের নির্দেশে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালটি ভাঙা হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মো. এহেতেশাম রেজা বলেন, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল অপসারণ কিংবা স্থাপনের ক্ষেত্রে ধানমন্ডিস্থ বঙ্গবন্ধু মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষের অনুমতি বাধ্যতামূলক। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ব্যত্যয় ঘটলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর এই ম্যুরালটি প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২০০২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০২৩
আরএ