ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

আইনের খসড়া প্রস্তুতে নাগরিকদের অন্তর্ভুক্তি প্রয়োজন: অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০২৩
আইনের খসড়া প্রস্তুতে নাগরিকদের অন্তর্ভুক্তি প্রয়োজন: অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ

ঢাকা: রাষ্ট্রীয় আইন বা নীতিমালার সংশোধন, সংযোজন, বিয়োজন বা নতুন আইন বা নীতিমালা তৈরির ক্ষেত্রে খসড়া প্রস্ততকালে সিএসও বা নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করলে সামাজিক চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করা অনেক সহজ হয়ে ওঠে বলে মনে করে অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ।

বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) সংস্থাটি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, নাগরিক সমাজ সংস্থাকে প্রাসঙ্গিক রাষ্ট্রীয় নীতিগুলেঅ প্রণয়ণের সঙ্গে সম্পৃক্তকরণ পারষ্পারিক সহযোগিতার ক্ষেত্র তৈরিতে অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে।

নাগরিক সমাজ সংগঠনের অ্যাডভোকেসি কার্যক্রম পরিচালনা, সচেতনতামূলক প্রচারণা একে অন্যের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যম তৈরি করে এবং রাষ্ট্রের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে।

অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ ইউরোপীয়ান কমিশনের সহ-অর্থায়নে ‘সুশীল: সাপোর্টিং দ্যা ইউনিটি অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি অব সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশনস (সিএসওস) টু আপহোল্ড হিউম্যান রাইটস, ন্যাশনাল ইন্টিগ্রিটি অ্যান্ড রুল অব ল ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্পের জেলা পর্যায়ের সহযোগী সংস্থার সহায়তায় কুষ্টিয়া, ঢাকা, সাতক্ষীরা, বান্দরবান এবং নওগাঁ জেলায় পাঁচটি পরামর্শ সভায় উপস্থিত সিএসও বা নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা এসব কথা বলেন।  

এ পরামর্শ সেশনে মোট ১৬৯ জন সিএসও বা নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

২০২৩ সালের শুরু থেকে ঢাকা, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নওগাঁ, কুষ্টিয়া, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, চট্টগ্রাম, বান্দরবানসহ মোট নয়টি জেলায় এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে; যার কার্যক্রম ২০২৬ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত চলবে। প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে নাগরিক সমাজ সংগঠনগুলোর (সিএসও) আরও দক্ষতা ও সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে ‘সুশীল’ প্রকল্পটির কার্যক্রম পরচিালিত হচ্ছে।

ঢাকা, নঁওগা, কুষ্টিয়া, বান্দরবন এবং সাতক্ষীরা জেলার কর্ম এলাকায় সিএসওরা নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা, শিশু অধিকার এবং লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণ, মানবাধিকার, ভূমি অধিকার, স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষা, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, আদিবাসী ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার সুরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয় নিয়ে কাজ করে আসছে।

এ বিষয়ে ঢাকার সেফটি অ্যান্ড রাইটস সোসাইটি সংস্থার একজন সিএসও প্রতিনিধি বলেন, নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা, শিশু অধিকার এবং লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণ নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছি। চাহিদার সঙ্গে সরকার বিভিন্ন সময়ে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা ও সহিংসতা প্রতিরোধে বিভিন্ন নীতি ও আইন প্রণয়ন করে থাকে। আমাদের যদি এসব নীতি তৈরির প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত করা হয় তবে আমরা আমাদের কাজ করার অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে পারি এবং বাস্তবিক প্রয়োগের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাগুলো শেয়ার করতে পারি।

নওগাঁ জেলায় আলোচনায় বরেন্দ্র উন্নয়ন সংস্থার সাপাহার উপজেলার সিএসও তাদের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রতিবন্ধকতার কথা তুলে ধরে বলেন, আমরা আদিবাসী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, আমাদের নামে জমি বরাদ্দ আছে। কিন্তু নীতি সংশোধন না হওয়ার কারণে বছরের পর বছর আমরা এ জমি নিতে পারছি না, কিছ দিন পর আমাদের বাস্তুহীন হয়ে ঘুরতে হবে।

সাতক্ষীরার ভূমিজ ফাউন্ডেশন সংস্থার একজন নাগরিক সমাজ প্রতিনিধি বলেন, আমরা বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কাজ করছি। এসব ইস্যুভিত্তিক কাজ করার ফলে আমরা কাছ থেকে নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর চাহিদা ও চ্যালেঞ্জগুলো জানতে পারছি এবং এগুলো থেকে উত্তরণের সম্ভাব্য উপায় নিয়েও কাজ করছি। তাই আমি মনে করি, বিভিন্ন ইস্যুভিত্তিক পলিসি প্রণয়ন বা সংশোধনে আমাদের নাগরিক সমাজ সংগঠনদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করলে পলিসিগুলো আরও বেশি জনবান্ধব ও গণমানুষের জন্য সহায়ক হবে।

এছাড়াও অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ-এর পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয় আইন বা নীতিমালার সংশোধন, সংযোজন, বিয়োজন বা নতুন আইন বা নীতিমালা তৈরীর ক্ষেত্রে খসড়া প্রস্তুতকালে নাগরিক সমাজকে অন্তর্ভুক্তিকরণের জন্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আবেদনপত্র জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০২৩
এমআইএইচ/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।