মাদারীপুর: মাদারীপুর জেলার রাজৈরে পোকা দমনের জন্য ব্যবহার করা কীটনাশকে নষ্ট হয়ে গেছে কৃষকের জমির বিপুল পরিমাণ টমেটো ও গাছ। দুই বিঘা জমির প্রায় ছয় হাজার গাছ মরে যাওয়ায় ক্ষতি হয়েছে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা।
রাজৈর উপজেলার তেলিকান্দি গ্রামের কৃষক মিন্টু মাতুব্বরের জমিতে ঘটে এমন ঘটনা। কৃষকের অভিযোগ, দোকানি ভালো মানের ওষুধ না দেওয়ায় ঘটেছে এমন ঘটনা।
জানা গেছে, কৃষক মিন্টু মাতুব্বর তার দুই বিঘা জমিতে টমেটো চাষ করেছিল। গাছে প্রচুর টমেটোর ফলনও এসেছে। এদিকে পোকার আক্রমণ ঠেকাতে জমিতে কীটনাশক ব্যবহার করতেই ঘটে বিপত্তি। ঢলে পড়ে টমেটো গাছ। নষ্ট হতে থাকে টমেটো।
এদিকে কীটনাশক ব্যবহারের পর এমন ঘটনার খবর পেয়ে বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মাঠে আসেন কৃষি কর্মকর্তা ও কীটনাশক ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক জানান, গত সপ্তাহে পোকা দমনে আমগ্রাম বাজারের বালা এন্টারপ্রাইজের দোকানি প্রমথ বালার কাছ থেকে কিনে আনেন কীটনাশক। ভলিয়াম ফ্লেক্সি নামের কীটনাশক নিয়ম মেনেই প্রয়োগ করেন জমিতে। পরে আস্তে আস্তে পুড়ে যেতে শুরু করে টমেটো গাছ।
কৃষকের অভিযোগ, দোকানি ভালোমানের কীটনাশক না দেওয়ায় ঘটেছে এমন ঘটনা। এতে ছয় হাজার টমেটো গাছ ও ফসল দুটোই নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতি হয়েছে ১৫-২০ লাখ টাকা। এমন ঘটনায় ক্ষুব্ধ হওয়ার পাশাপাশি আতঙ্কে অন্য কৃষকরা। অভিযুক্ত কোম্পানিকে আইনের আওতায় আনার দাবি তাদের।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মিন্টু মাতুব্বর আরও বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি গাছে ১০-১৫ কেজি টমেটো হয়েছে। বাজারে প্রতিকেজি টমেটো পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকায়। সব মিলিয়ে ১৫-২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমি এই ক্ষতিপূরণ চাই।
আরেক কৃষক জয়নাল খাঁ বলেন, এমন হলে অন্য কৃষকরা কৃষিকাজ আর করবে না। একটু লাভের আশায় ফসল করা হয়, এমন ক্ষতি হলে ভয়ে আর কেউ চাষাবাদ করবে না।
সিনজেনটা কোম্পানির মাদারীপুর ইউনিটের প্রতিনিধি তানভীর আহম্মেদ জানান, ব্যবহার করা কীটনাশক পাঠানো হয়েছে ল্যাবে। পরীক্ষার পর জানা যাবে ঘটনার কারণ। এছাড়া অন্য জমিতেও পরীক্ষামূলক এই কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়েছে, দুদিন পর বিস্তারিত বলা যাবে। '
রাজৈর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা স্বাসতী সন্ধ্যা দেবনাথ জানান, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে সব ধরনের সহযোগিতার করা হবে। কোম্পানি দায়ী থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া কোম্পানিকে ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২৪
আরএ