পঞ্চগড়: ‘বিডিআর’ (বর্তমানে বিজিবি) বিদ্রোহে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ১৫ বছরেও বিচার কার্যক্রম পুরোপুরি শেষ হয়নি। এ অবস্থায় দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি চেয়ে পঞ্চগড়ের আটক পাঁচ ‘বিডিআর’ সদস্যের স্বজনরা প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন।
জানা গেছে, দুটি মামলার নিষ্পত্তি হলেও বিস্ফোরক মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ায় দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন এ পাঁচজনের স্বজনরা। কোনো কূল কিনারা না পেয়ে মামলার নিষ্পত্তি চেয়ে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেন তারা।
মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে তারা পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আব্দুল কাদেরের হাতে স্মারকলিপিগুলো জমা দেন।
স্মারকলিপিতে জানা গেছে, গত ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর সদর দপ্তরে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের পর করা হত্যা মামলায় কেউ কেউ খালাস পেয়েছেন। আবার অনেকে হত্যা মামলায় ফৌজদারি আইনে বিভিন্ন মেয়াদের সাজা ভোগ করেছেন। কিন্তু দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলাটি নিষ্পত্তি না হওয়ায় এবং সাংবিধানিক অধিকার থাকা সত্ত্বেও জামিন না পাওয়ায় পরিবারগুলো মানবেতর জীবনযাপন করছে। হত্যা মামলাটির দুই বছর ১১ মাসে সব আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে রায় দেওয়া হয়। তবে বিস্ফোরক মামলাটির ক্ষেত্রে ১৫ বছরের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। বিস্ফোরক মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য নিম্ন আদালতে আবেদন করা হলেও কোনো অগ্রগতি না পেয়ে ও আর্থিক সংকটে মামলাটি উচ্চ আদালতে পরিচালনা করতে না পেরে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন পরিবারগুলোর সদস্যরা।
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মামলায় পঞ্চগড় জেলার পাঁচ বিডিআর সদস্য ঢাকার কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন।
তারা হলেন-পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার বেংহাড়ি কালিগঞ্জ গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে বিডিআর সদস্য আরিফুল ইসলাম, তেঁতুলিয়া উপজেলার হাওয়াজোত শিপাহিপাড়া গ্রামের মৃত আসির উদ্দীনের ছেলে বিডিআর সদস্য বাবুল হোসেন, তেঁতুলিয়া উপজেলার মাঝিপাড়া লোহাকাচী গ্রামের সফিউল ইসলামের ছেলে বিডিআর সদস্য হাসিনুর রহমান, পঞ্চগড় সদরের কাগোজিয়া পাড়া গ্রামের মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে বিডিআরের সুবেদার সপিজ উদ্দীন ও বোদা উপজেলার বোস পাড়া গ্রামের মৃত মনসুর আলীর ছেলে বিডিআর সদস্য আফ্তাবুর রহমান।
এ পাঁচজন তাদের নিজ নিজ পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। টাকার অভাবে মামলা চালানো সম্ভব হচ্ছে না পরিবারগুলোর পক্ষে। এজন্য তারা মামলার নিষ্পত্তি চেয়ে সরকারের কাছে অনুরোধ করে বলেন, বিগত ১৫ বছর ধরে পরিবারের উপার্জক্ষম ব্যক্তি হারিয়ে আমরা সবাই মানবেতর জীবনযাপন করছি। আদালতে গিয়ে আমরা তাদের জামিন পাচ্ছি না। দুটি মামলার নিষ্পত্তি হলেও একটি এখনো ঝুলে রয়েছে। আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি, মামলাটি যেন দ্রুত নিষ্পত্তি করা হয়।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আব্দুল কাদের বাংলানিউজকে বলেন, স্মারকলিপি পেয়েছি। স্মারকলিপিগুলো যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৪
এসআই