ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

উত্তরপত্র প্রিন্ট করে হলে হলে সরবরাহ, অধ্যক্ষের দুই বছরের কারাদণ্ড

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪০ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০২৪
উত্তরপত্র প্রিন্ট করে হলে হলে সরবরাহ, অধ্যক্ষের দুই বছরের কারাদণ্ড

চাঁদপুর: চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে নকল সরবরাহের দায়ে মাদরাসা অধ্যক্ষ মো. ছায়েদুল ইসলামকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। একইসঙ্গে এক হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

উত্তরপত্র প্রিন্ট করে হলে হলে সরবরাহ করেছিলেন এই অধ্যক্ষ।  

রোববার (০৩ মার্চ) সাড়ে ১১টায় উপজেলার পৌর এলাকায় শাহরাস্তি চিশতিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদরাসা কেন্দ্রে দাখিল ইংরেজি প্রথম পত্রের পরীক্ষা চলাকালে এই ঘটনা ঘটে।

দুপুর ১২টার দিকে শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়াসির আরাফাত কেন্দ্রে নকল সরবরাহের ঘটনা নিশ্চিত হয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।

কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ছায়েদুল ইসলাম উপজেলার রাজাপুরা আল-আমিন ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর থানার ভদ্রগাছা গ্রামের মৃত সুন্দর আলীর ছেলে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আরাফাত বলেন, শাহরাস্তি চিশতিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদরাসা কেন্দ্রে দাখিল ইংরেজি প্রথমপত্রের পরীক্ষা চলাকালে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সরকারি গাড়ি দূরে রেখে হেঁটে কেন্দ্রে প্রবেশ করি। এ সময় কেন্দ্রের ভেতরে অবস্থানরত অফিস সহকারী, আয়া এবং কয়েকজন শিক্ষক ছোটাছুটি করতে শুরু করেন। কেন্দ্রে অনিয়ম ও নকলের বিষয়টি সন্দেহ হলে শ্রেণিকক্ষ এবং শিক্ষার্থীদের দেহ তল্লাশি করি। পরে শ্রেণিকক্ষের বাইরে এবং পরীক্ষা কেন্দ্রের বাউন্ডারি সীমানার মধ্যে অসংখ্য হাতে লিখে সমাধান করা প্রশ্নের উত্তর ও নকল পাওয়া যায়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতি টের পেয়ে শিক্ষকদের ইঙ্গিতে পরীক্ষার্থীরা নকল জানালা দিয়ে শ্রেণিকক্ষের বাইরে ফেলে দিয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, হাতে লিখে সমাধান, ফটোকপি করা নকল দেখে কেন্দ্রে উপস্থিত দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, অধ্যক্ষ ছায়েদুল ইসলাম পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রিন্টারে ২৫ থেকে ৩০ কপি হাতে লেখা নকলের প্রিন্ট বের করেছেন। অভিযুক্ত শিক্ষককে পরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে মাদরাসার অধ্যক্ষ মো. ছায়েদুল ইসলাম জানান, বাসায় তিনি মোবাইল ফোন রেখে এসেছেন। পরে তার নম্বরে কল দিলে পাশের ব্যাগের মধ্যে মোবাইল ফোনটি বেজে ওঠে। মোবাইল ফোনে প্যাটার্ন লক ছিল, তাকে প্যাটার্ন লক খুলতে বললে তিনি তৎক্ষণাৎ মোবাইল ফোন থেকে কিছু একটা ডিলিট করার চেষ্টা করেন। পরে তার মোবাইল ফোন তল্লাশি করে হোয়াটসঅ্যাপের মধ্যে শ্রেণিকক্ষের বাইরে উদ্ধারকৃত হাতে লেখা নকলের হুবহু ছবি পাওয়া যায়।

কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আরও জানান, তার এক ছাত্র এগুলো সমাধান করে তাকে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়েছে। পরে তিনি কেন্দ্রের প্রিন্টারে প্রিন্ট করে রুমে রুমে নকল সরবরাহ করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০২৪

এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।