ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

তিন দিনে ৮০ জন নারী পেলেন সেলাই মেশিন

নিউজ ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৬ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২৪
তিন দিনে ৮০ জন নারী পেলেন সেলাই মেশিন

অসচ্ছল নারীদের স্বাবলম্বী করতে বিনামূল্যে সেলাই প্রশিক্ষণ শেষে সেলাই মেশিন উপহার দিচ্ছে দেশের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ। এরই অংশ হিসেবে ঠাকুরগাঁও জেলায় ৬০ জন নারীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের সেলাই মেশিন উপহার দেওয়া হয়েছে।

 

গত বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) ৪৫টি এবং শুক্রবার ১৫টি সেলাই মেশিন তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।  

এদিকে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলায় ২০ জন নারীকে প্রশিক্ষণ শেষে শনিবার (৯ মার্চ) সেলাই মেশিন উপহার দেওয়া হয়।

অন্যদিকে শনিবার নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলায় বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলের শিক্ষার্থীদের এক বীর মুক্তিযোদ্ধা তার যুদ্ধদিনের গল্প শুনিয়েছেন।  

বীরগঞ্জ (দিনাজপুর): দেশের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের সেলাই মেশিন উপহার পেয়েছেন দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ২০ জন অসচ্ছল নারী। তাদের তিন মাসের প্রশিক্ষণ শেষে শনিবার সেলাই মেশিনগুলো উপহার দেওয়া হয়।  
সেলাই মেশিন বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন দিনাজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য জাকারিয়া (জাকা)।
বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফজলে এলাহি, বসুন্ধরা শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান, উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি শিবলী সাদিক, জেলা পরিষদ সদস্য রোকনুজ্জামান বিপ্লব, আওয়ামী লীগ নেতা মনোয়ার হোসেন, কালের কণ্ঠ’র জেলা প্রতিনিধি এমদাদ হক, বীরগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি সোহেল আহমেদ, বসুন্ধরা শুভসংঘ জেলা শাখার সভাপতি রাসেল ইসলামসহ অনেকে।  

সংসদ সদস্য জাকারিয়া বলেন, দেশে সামাজিক ও মানবিক কাজের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। বসুন্ধরা গ্রুপ দেশরত্ন শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমার নির্বাচনী এলাকার প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছে। অসহায়, বিধবা, এতিম, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর অসচ্ছল নারীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। প্রশিক্ষণ শেষে বিনামূল্যে সেলাই মেশিন দিচ্ছে। এটা সত্যিই প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এর ফলে নারীরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারছেন ও স্বাবলম্বী হচ্ছেন।
বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সেলাই মেশিন পাওয়া মনিকা মুরমু (৩৫) বলেন, আমার ১০ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল। স্বামীর সঙ্গে তিন বছর সংসার করেছি। এক ছেলে স্কুলে পড়ে। স্বামী কোনো কাজ করত না। আমার ওপর রোজ নির্যাতন করত। তাই আমি তাকে ছেড়ে ছেলেকে নিয়ে বাবার বাসায় চলে আসি। আমার এ অবস্থা দেখে বসুন্ধরা শুভসংঘ সেলাই শেখার সুযোগ করে দেয়। তিন মাস প্রশিক্ষণ শেষে আজ সেলাই মেশিন উপহার পেয়ে খুব ভালো লাগছে।

জলঢাকা (নীলফামারী): মহান স্বাধীনতার মাসে বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলের শিক্ষার্থীদের কাছে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনালেন বীর মুক্তিযোদ্ধা হামিদুর রহমান। তিনি যুদ্ধকালীন কোম্পানি কমান্ডার হিসেবে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অপারেশনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

শনিবার দুপুরে নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলায় বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলে ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের গল্প উপস্থাপিত হয়। বসুন্ধরা শুভসংঘ জলঢাকা উপজেলা শাখা আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের সাবেক সহকারী কমান্ডার মকছুদার রহমান, বসুন্ধরা শুভসংঘ জলঢাকা উপজেলা শাখার সভাপতি অধ্যক্ষ বিবেকানন্দ মহন্ত, বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলের শিক্ষক আয়শা সিদ্দিকা, ইতি মনিসহ অনেকে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা হামিদুর রহমান বলেন, ১৯৭১ সালের মে মাসের শেষের দিকে দহগ্রাম ক্যাম্পে যুবশিবিরে যোগ দিই। সেখানে ১০ দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এরপর ভারতীয় সেনাবাহিনীর ট্রাকে রায়গঞ্জ ইয়ুথ ক্যাম্পে পাঠানো হয়। সেখানে ১৫ দিনের প্রশিক্ষণের মাঝে আমাকে সহকারী প্লাটুন কমান্ডারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপর মেডিকেল টেস্টের পর অস্ত্র প্রশিক্ষণ নেওয়ার উদ্দেশে দার্জিলিংয়ে মুজিব ক্যাম্পে পাঠানো হয়। সেখানে ব্রেভো উইংয়ে ট্রেনিং করি। পারফরম্যান্স ভালো করায় প্রথম সপ্তাহে আমাকে প্লাটুন কমান্ডার করা হয়।

তিনি বলেন, দার্জিলিংয়ে ট্রেনিং শেষ হলে আট শতাধিক মুক্তিসেনার একটি বহর গীদালদাহে একটি ক্যাম্পে আসি। সেপ্টেম্বরের শেষে ক্যাপ্টেন দেলোয়ার সাহেবের নির্দেশে গুড স্ট্রং হিসেবে আমাকে এবং অন্য আরও সাতজন প্লাটুন কমান্ডারসহ ২২ জনের একটি টিম গঠন করা হয়। তিনি আমাদের মোগলহাট পাকিস্তান বাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্প উড়িয়ে দিতে নির্দেশ দেন। সেই অপারেশনে কমান্ডার হিসেবে আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১১১৪ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২৪
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।