নোয়াখালী: নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের শিক্ষা-চিকিৎসা ব্যবস্থায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) শুভেচ্ছাদূত সুইডেনের প্রিন্সেস ক্রাউন ভিক্টোরিয়া।
পুরো এক ঘণ্টা স্কুল ও ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল পরিদর্শন, নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলার পর এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (২০ মার্চ) দুপুরের দিকে ৩৯ সদস্যের প্রতিনিধিদল নিয়ে হেলিকপ্টারে করে তিনি ভাসানচর ত্যাগ করেন। এর আগে সকালে হাতিয়া থেকে হেলিকপ্টারে করে ভাসানচর অবতরণ করেন।
ভাসানচরের শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন সূত্র জানায়, বুধবার (২০ মার্চ) বেলা ১০টা ১৫ মিনিটের দিকে ৩৯ সদস্যের প্রতিনিধিদল নিয়ে হেলিকপ্টারে করে ভাসানচর আসেন জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) শুভেচ্ছাদূত সুইডেনের প্রিন্সেস ক্রাউন ভিক্টোরিয়া। এসময় নৌবাহিনী ঘাঁটির ১ নম্বর হেলিপ্যাডে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের এরিয়া কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল খন্দকার মিসবাহ উল আজিম, সম্মুখ ঘাঁটির অধিনায়ক কমান্ডার আনোয়ারুল কবির, শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের অতিরিক্ত কমিশনার (ভাসানচর) মাহফুজার রহমান, ক্যাম্প ইনচার্জ মো. রফিকুল হক, নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মোর্তাহীন বিল্লাহ প্রমুখ।
তারপর সুইডেনের প্রিন্সেস ক্রাউন ভিক্টোরিয়া ৬৭ নম্বর ক্লাস্টারে অবস্থিত ব্র্যাক এনজিওর স্কুল পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে তিনি রোহিঙ্গাদের শিক্ষা-চিকিৎসা ব্যবস্থায় সন্তোষ প্রকাশ করেন।
তারপর ভিআইপি গেস্ট হাউজে অবস্থান শেষে বেলা ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে প্রতিনিধি দল নিয়ে হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে তিনি ভাসানচর ত্যাগ করেন।
শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের অতিরিক্ত কমিশনার (ভাসানচর) মাহফুজার রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) শুভেচ্ছাদূত সুইডেনের প্রিন্সেস ক্রাউন ভিক্টোরিয়া ভাসানচরে নেমে কীভাবে রোহিঙ্গাদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয় এবং কীভাবে শিক্ষা দেওয়া হয় তার বিস্তারিত জেনেছেন। প্রায় এক ঘণ্টা তিনি এই দুইটি স্থান পরিদর্শন করেন। এ ছাড়া আরও কোথাও তিনি যাননি। সবশেষ তিনি রোহিঙ্গাদের শিক্ষা ব্যবস্থা ও চিকিৎসা সেবায় সন্তুষ্ট হয়েছেন।
এর আগে সকাল ৮টায় হেলিকপ্টারে করে হাতিয়া অবতরণ করেন জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) শুভেচ্ছাদূত সুইডেনের প্রিন্সেস ক্রাউন ভিক্টোরিয়া। তারপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ঝুঁকিতে থাকা মানুষের অনুভূতি শুনে ও তাদের জীবন-জীবিকা অবলোকন শেষে মানুষের জীবনযাত্রার উন্নয়নে কাজ করবেন বলে জানান। এরপর ৯টায় ৪৫ মিনিটে তিনি বুড়িরচর ইউনিয়নের পশ্চিম বড়দেইল এলাকা থেকে হেলিকপ্টারে ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা দেন।
প্রসঙ্গত, নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের জন্য সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়।
ভাসানচরের পুরো আবাসন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে নৌবাহিনী। বিভিন্ন ধাপে কক্সবাজার থেকে এখানে প্রায় ৩৬ হাজার রোহিঙ্গাকে স্থানান্তর করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০০৮ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২৪
আরএ