ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

আগামী বছরের শুরুতেই মধুখালী-মাগুরার অংশে রেল চালু

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৪ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২৪
আগামী বছরের শুরুতেই মধুখালী-মাগুরার অংশে রেল চালু

মাগুরা: আগামী বছরের শুরুতেই মাগুরা-ফরিদপুর-মধুখালী স্বপ্নের রেলপথ চালু হবে এমনটাই আশা প্রকাশ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ক্যাসেল কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান। ইতিমধ্যে মধুখালী থেকে কামারখালী হয়ে মাগুরা পর্যন্ত ব্রড গেজ রেললাইন প্রকল্পের ৪৯ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।

প্রকল্পের পরিচালক জানান, ২০২৫ সালের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে আশা করছেন তারা। মাগুরা অংশে অধিগ্রহণ করা জমি এখনও বুঝে না পাওয়ায় কাজ কিছুটা ধীর গতিতে এগুচ্ছে।

রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে চার বছর মেয়াদি এ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। যা শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ডিসেম্বরে। তবে জমি অধিগ্রহণ ও করোনা প্রাদুর্ভাবসহ নানা জটিলতার কারণে প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের মে মাসে। ওই বছরের ২৭মে ভার্চুয়ালি ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।

সরেজমিনে গত বৃহস্পতিবার মধুমতী নদীতে নির্মাণাধীন রেল সেতুর মাগুরা প্রান্তে গিয়ে দেখা যায়, পিলার নির্মাণের কাজ চলছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু পিলার দৃশ্যমান হয়েছে। মধুখালী অংশে পুরোনো রেললাইন সংস্কারের কাজ চলছে। এ অংশে বেশি কিছু বক্স কালভার্ট নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। তবে মাগুরা অংশে দৃশ্যমান কাজ দেখা যায়নি। এ কাজের অংশ হিসেবে মাগুরার ঠাকুরবাড়ি এলাকায় নতুন একটি রেলস্টেশন নির্মাণ হওয়ার কথা। সেখানে গিয়ে দেখা যায় কিছু নির্মাণ সামগ্রী এনে ফেলা রাখা হয়েছে। তবে রেলস্টেশন নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি।

প্রকল্পের পরিচালক আসাদুল হক জানান, মাঠ পর্যায়ে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে। এখন দ্রুত গতিতে কাজ এগুচ্ছে। তিনি বলেন, প্রকল্পের মেয়াদ বাড়লেও খরচ বাড়েনি। মধুমতী নদীতে রেল সেতুসহ পুরো প্রকল্পের ৪৯ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আশা করা হচ্ছে আগামী বছরের মধ্যে এখানে রেল চলা চল শুরু হবে। এখনও মাগুরা অংশে অধিগ্রহণ করা বেশির ভাগ জমি বুঝে পাওয়া যায়নি।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মাগুরা অংশে রেল প্রকল্পে অধিগ্রহণ করা জমির পরিমাণ ১০৭ একরের মতো। যার মূল্য প্রায় ১১৫ কোটি ৪৩ লাখ ৩৯ হাজার টাকা। চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে অধিগ্রহণ করা এসব জমির বিপরীতে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে চেক বিতরণ শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত দুদ ফায় ১ দশমিক ৯৬ একর জমির ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রায় দেড় কোটি টাকার চেক বিতরণ করা হয়েছে।

মাগুরার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ বলেন, জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া কয়েক ধাপে সম্পন্ন হয়। নানা জটিলতা কাটিয়ে আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে চেক বিতরণ শুরু করেছি। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা চাইলে এখন স্টেশনের কাজ শুরু করতে পারবে। ঈদের আগে আরও কিছু জমি তাঁদের বুঝিয়ে দেওয়া হবে। এরপর ধাপে ধাপে রেললাইনের জমির শিগগিরই বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এই প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় এক হাজার ২১৭ কোটি টাকা। প্রকল্পের আওতায় মধুখালী থেকে কামারখালী হয়ে মাগুরা শহর পর্যন্ত ১৯ দশমিক ৯ কিলোমিটার মেইন লাইন নির্মাণ, কামারখালী ও মাগুরা স্টেশন ইয়ার্ডে ৪ দশমিক ৯ কিলোমিটার লুপ লাইন নির্মাণ, দুটি নতুন স্টেশন (কামারখালী ও মাগুরা) নির্মাণ করা হবে। এরমধ্যে ৪৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯ দশমিক ৯ কিলোমিটার ব্রড গেজ রেলপথ নির্মাণ করছে কাজী নাবিল আহমেদের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ক্যাসেল কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড। অপরদিকে মধুমতী নদীর ওপর দুই হাজার ৪১২ মিটার দৈর্ঘ্যের রেলসেতু নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে ৪৪৯ কোটি টাকায়। এ কাজের ঠিকাদারি পেয়েছে মীর আক্তার কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। বাকি অর্থ ব্যয় হবে জমি অধিগ্রহণসহ অন্যান্য কাজে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৩ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।