সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি অসুস্থ স্বামীর চিকিৎসার বিষয়ে জরুরি বিভাগে কথা বলতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন স্ত্রী।
এ সংক্রান্ত সিসিটিভির একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়।
জানা গেছে, কলারোয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি থেকে গত তিন থেকে চার দিন যাবত চিকিৎসা নিয়ে আসছেন উপজেলার কয়লা ইউনিয়নের আলাইপুর গ্রামের শেখ আবু তালেব। হঠাৎ সোমবার (০১ এপ্রিল) রাতে আবু তালেবের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তার স্ত্রী সুফিয়া খাতুন (৫৫) জরুরি বিভাগে গিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসককে জানালেও তারা বিষয়টি গুরুত্ব দেননি। পরে মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে তিনি আবারও জরুরি বিভাগে এলে মেডিকেল অফিসার ডা. তানভীর জাহানের সামনেই স্বাস্থ্য সহকারী ফরহাদ হোসেন সুফিয়া খাতুনকে মারধর করেন। একপর্যায়ে তার হাতে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে মুখে আঘাত করলে রক্তাক্ত হন তিনি। পরে ওয়ার্ড বয় শরিফ হোসেন এসে তাকে বাঁচায়।
ওই রুমে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেছে দেখা যায়, কথা বলার এক পর্যায়ে সুফিয়া খাতুনের ঘাড় ধাক্কা ও হাতে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে তার মুখে আঘাত করেন মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ফরহাদ হোসেন। পরে ওয়ার্ড বয় শরিফ হোসেন দৌড়ে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন এবং সুফিয়া খাতুনকে জরুরি বিভাগ থেকে বাহিরে পাঠিয়ে দেন।
ভুক্তভোগী সুফিয়া খাতুন বলেন, আমার স্বামী দীর্ঘদিন অসুস্থ। আমি অর্থের অভাবে ভালো ডাক্তার দেখাতে পারছি না। যে কারণে কলারোয়া হাসপাতালে ভর্তি রেখেছি। সোমবার রাতে স্বামীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আমি প্রথমে নার্সদের কাছে যাই। তারা আমাকে নিচে ডাক্তারের কাছে যেতে বলেন। আমি নিচে গিয়ে ডাক্তারদের বললে তারা বিষয়টি গুরুত্ব দেয় নি। পরে মঙ্গলবার সকালে আবারও আমি ডাক্তারের কাছে যাই। সেখান থেকে আমাকে বলেন, আপনার রোগী এখন নিয়ে চলে যান। কথা বলতে বলতে ফরহাদ হোসেন আমার ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিচ্ছিল। আমি তাকে বলি আমার গায়ে হাত দিচ্ছেন কেন? পরে হঠাৎ তার হাতে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে আমার মুখে আঘাত করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, আমি বিষয়টি জেনেছি। এটি দুঃখজনক ঘটনা। আমরা তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেব।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহবুবুর রহমান জানান, বিষয়টি আমরা জেনেছি এবং সিসি ফুটেজ দেখেছি। এটি একটি দুঃখজনক ঘটনা। আমরা খুব দ্রুত একটি তদন্ত কমিটি করে দোষীকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় নিয়ে আসবো।
কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী সুফিয়া। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০২৪
এসএম