ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ডামুড্যায় হয়ে গেল ঐতিহ্যবাহী মাছ ধরা উৎসব

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২৪
ডামুড্যায় হয়ে গেল ঐতিহ্যবাহী মাছ ধরা উৎসব

শরীয়তপুর: শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার কনেশ্বর ইউনিয়নের শুতলকাটি গ্রামে ফোরকার পাড় দীঘিতে (পুকুর) মাছ ধরার উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতি বছরের মতো এবারও দুইশত বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী এ উৎসবে ছিল ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা।

শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল ৮টা থেকে শুরু করে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এ মাছ ধরা উৎসবে দেশীয় উপকরণ বিভিন্ন জাল নিয়ে অংশ নেন প্রায় ৩ শতাধিক মানুষ।  

সকাল থেকেই মাছ শিকারের বিভিন্ন উপকরণ নিয়ে দলবদ্ধ হয়ে দীঘি (পুকুর) পাড়ে এসে জড়ো হতে থাকেন মানুষরা। পানিতে একের পর এক ঝাঁপ দেওয়া আর হৈ হুল্লোর করে ছন্দের তালে তালে এগিয়ে যেতে থাকেন মাছ শিকারিরা। এ যেন হারিয়ে যাওয়া বাংলার সৌন্দর্যময় দৃশ্য আর ঐতিহ্যের জয়গান। শুতলকাটি গ্রামের দীঘি (পুকুরে) মাছ ধরা উৎসব শিকারিদের অনেকেই বিভিন্ন দেশি প্রজাতির মাছ ধরেন।

জানা গেছে, প্রায় ২০০ বছর যাবত প্রতি বছর একটা নির্দিষ্ট সময়ে শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার কনেশ্বর ইউনিয়নের সুতলকাঠি গ্রামে প্রায় ১৫ একরের এক বিশাল দিঘীতে দিনব্যাপী ঝাঁকি জাল দিয়ে চলে মাছ ধরা উৎসব। এই দিঘীর মালিকরা (৩২ টি পরিবার) পূর্বপুরুষদের ধারাবাহিকতায় অনুসরণ করে এই উৎসব পালন আসছে। শনিবার দিনব্যাপী এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। দূরদূরান্ত থেকে কয়েক হাজার লোক আসেন এই উৎসবে। কারো হাতে পলো কারও হাতে জাল। মাছ ধরার নানা উপকরণ হাতে শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই মগ্ন মাছ ধরার জন্য। সবাই মেতেছেন মাছ ধরা উৎসবে। এই উৎসবের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে দিঘীর পাড়ে মেলার আয়োজন করা হয়। বাড়িগুলোতে চলে নানারকম রান্না। এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে চান আয়োজকরা।  

মাছ ধরা দেখতে আসা কয়েকজন দর্শনার্থী বলেন, ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী সুতলকাঠির দিঘীর মাছ ধরা দেখে ভাল লাগছে। সবচেয়ে ভালো লাগছে আপনি যে বাড়ি যাবেন সে বাড়িতেই মাছ খেতে পারবেন। আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি এই আয়োজন কমিটিকে।

আয়োজন কমিটির সদস্য বিল্লাল হোসেন বলেন, আমরা যেহেতু মাছে ভাতে বাঙালি। নতুন প্রজন্মের অনেকেই ঝাঁকি জাল দিয়ে মাছ ধরার বিষয়টি বোঝে না। আমাদের ফোরকারপাড় ঐতিহ্যবাহী দীঘির এই আয়োজনটা বর্তমান প্রজন্মের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে আমি মনে করি। আমরা প্রতি বছর একটা নির্দিষ্ট দিনে, একটা নির্দিষ্ট সময় এই দীঘিতে জাল ফেলা হয়। অনেক লোক দূরদূরান্ত থেকে দেখতে আসেন এবং অনেকে জাল নিয়ে মাছ শিকার করতে আসেন।

কনেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান বাচ্চু মাদবর বলেন, ঝাঁকি জাল দিয়ে মাছ শিকার উৎসবে দেখতে দুই দিন আগেই দূরদূরান্ত থেকে আসে আত্মীয়জনরা। এই উৎসবের মাধ্যমে পুরোনো ঐতিহ্য দেখতে পাওয়া যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।