সাভার: আনজু পরকীয়ায় আসক্ত, এমন ধারণা থেকে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন স্বামী ফিরোজ। কিন্তু কীভাবে হত্যা করবেন? এ উপায় পেতে তিনি বেছে নেন ভারতীয় টিভি সিরিজ ক্রাইম পেট্রোলকে।
রোববার (২৮ এপ্রিল ) দুপুর ১২টার দিকে আশুলিয়া থানার অডিটোরিয়ামে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পোশাক শ্রমিক আনজু হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনের কথা গণমাধ্যমকে জানান ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) আবদুল্লাহ হিল কাফি।
তিনি জানান, গ্রেপ্তার ফিরোজ মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর থানার রৌহা গ্রামের মৃত হাকিম উদ্দিনের ছেলে। কাশিমপুর বাগবাড়িতে একটি বাসায় স্ত্রী আনজু খাতুনকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন। নিহত আনজু নরসিংহপুরের হা-মীম গ্রুপের একটি পোশাক কারখানার অপারেটর হিসাবে কাজ করতেন। তিনি গাইবান্ধা জেলার সদর থানার ঘাগুয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা।
আবদুল্লাহ হিল কাফি বলেন, আনজু খাতুন পরকীয়া করছেন এমন সন্দেহ থেকে হত্যার পরিকল্পনা করে স্বামী ফিরোজ। ভারতীয় টিভি সিরিজ ক্রাইম পেট্রোল দেখে দেখে স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। নানা কৌশলও রপ্ত করেন এ অনুষ্ঠান দেখে। পরে পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার আগের দিন ২৫ এপ্রিল নিজের ব্যবহৃত মোবাইল সিম দৌলতপুর নিজ বাড়িতে রেখে আশুলিয়ায় এসে নতুন সিম কেনেন ফিরোজ। পরে আনজু খাতুনের কর্মস্থল ছুটি হলে কবিরাজ দেখানোর কথা বলে তাকে একটি বাঁশ বাগানে নিয়ে যান। সেখানে সালাই রেঞ্জ নিয়ে আনজুর মুখ ও মাথায় আঘাত করে। স্ত্রীর মৃত্যু নিশ্চিত করতে তার চোখও উপড়ে ফেলেন ফিরোজ।
এরপর আনজু ও নিজের রক্তমাখা জামাকাপড় জামগড়ার ফ্যান্টাসি কিংডমের পাশের একটি ডাস্টবিনে ফেলে নতুন জামাকাপড় পরে আবার গ্রামে ফেরেন ফিরোজ। হত্যা পরিকল্পনার শেষ ধাপে কৌশল অনুযায়ী তিনি আনজুর লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। এরপরই পুলিশ তাকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, নিহত পোশাক শ্রমিক আনজুর মরদেহের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে আসামি চিহ্নিত করা হয়। এরপর গ্রেপ্তারের জন্য তদন্ত শুরু করে পুলিশ। সেই পরিপ্রেক্ষিতে সন্দেহভাজন হিসেবে ফিরোজকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে হত্যার কথা স্বীকার করেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত ২৬ এপ্রিল দুপুরে সাভারের আশুলিয়ার কাঠগড়া নয়াপাড়া এলাকার একটি গহীন বাঁশ বাগান থেকে আনজুর ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০২৪
এমজে